পার হয়নি মনোনয়নের ২৪ ঘণ্টারও। সামনেই পুরভোট। ব্যস্ততা সব শিবিরেই। তবে চন্দননগরের দেওয়ালগুলিতে দেখা যাচ্ছে শুধুই ঘাসফুল। ইতিউতি লালের নিশান দেখা গেলেও গেরুয়া প্রায় নেই। দেওয়াল লিখনের প্রতিযোগিতায় রাজ্যের বিরোধী দলকে কয়েকশো কদম পিছনে ফেলেছে শাসক শিবির। শহর জুড়ে বিজেপি নেতাকর্মীদের দেওয়াল লিখনে উৎসাহ সেভাবে দেখাই যাচ্ছেনা। রাজনৈতিক মহল বলছে, কর্মীদের অভাবই বিজেপিকে ভোগাচ্ছে ক্রমাগত। অন্যদিকে, অল্প সংখ্যক দলীয় কর্মী নিয়ে বামেরা নেমে গিয়েছে মাঠে।
এপ্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, “দেওয়াল লিখন আগেই শুরু হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার আরও জোরকদমে চলছে। শহরজুড়ে দিন এবং রাতেও দেওয়াল লেখার কাজ হচ্ছে।” তাঁর দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস চন্দননগরে শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে যাবতীয় কাজ করে। তাই প্রথমে মনোনয়ন পর্ব সুষ্ঠুভাবে মেটানো সম্ভব হয়েছে এবার দেওয়াল লিখনের পর্ব শুরু হয়েছে সুষ্ঠুভাবে। কর্মীদের উৎসাহ গোটা শহর জুড়ে দেখা যাচ্ছে। সিপিএম নেতৃত্ব জানিয়েছে, দলের প্রায় সব প্রার্থী মাঠে ময়দানে কাজ করা তরুণ। তারা নিজেদের মতো করে দেওয়াল লেখার কাজ করছে। এ নিয়ে কারও সঙ্গে কোনও প্রতিযোগিতা নেই। কেবলমাত্র ভোটের স্বাভাবিক কাজকর্ম করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিজেপি যুবমোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউ বলেন, “দেওয়ালগুলি শাসকদল দখল করে নিয়েছে। এ নিয়ে কিছু বলতে গেলেই বিরোধ হবে। তাতে আমাদের নেতাকর্মীদের জেলে পাঠানো সুবিধা হবে। আমরা যতটা দেওয়াল খালি পাব তা লেখা হবে। ইতিমধ্যে কিছু দেওয়ালে লেখা হয়েছে। আমরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে চলছি। কোথাও কর্মীদের উৎসাহের অভাব নেই।”
এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “দেওয়াল দখল একটি ক্লিশে হয়ে যাওয়া অজুহাত। বামেরা দেওয়াল লিখনের জন্য দেওয়াল পাচ্ছে কি করে? আসলে এসব বলে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার চেষ্টা করছে বিজেপি।” চন্দননগরের পাশাপাশি এবার ফরাসডাঙার দেওয়ালও বর্ণময় হয়ে উঠতে শুরু করেছে। ‘আরও উন্নয়ন’ এই ডাক দিয়ে দেওয়াল লিখতে শুরু করেছে তৃণমূল। অলিগলি থেকে রাজপথ, ঘাসফুলের উপস্থিতি চমকে দেওয়ার মতো। দুটি দেওয়াল লেখার পরিকল্পনা কর্মীদের উৎসাহে চারটে হয়ে যাচ্ছে। তুলনায় অনেকটা পিছিয়ে থাকলেও চন্দননগরে ভোটে বামেদের দেওয়াল লিখনও শুরু হয়েছে। এই তালিকায় দাগ কাটার মতো উপস্থিতি নেই বিজেপি আর কংগ্রেসের। রাজনৈতিক মহল বলছে, দেওয়াল লিখন যদি কোনও মানদণ্ড হয় তবে ইতিমধ্যেই নির্ধারিত চন্দননগরের ভোটভাগ্য।