ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশের আর্থিক সমৃদ্ধি বেড়েছে, জীবনযাপনের মান যোগী আদিত্যনাথের শাসনে উন্নত হয়েছে বলে বিজেপির অনবরত প্রচারের মধ্যে ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল। দিনকয়েক আগে উত্তরপ্রদেশে ভোটপ্রচারে এসে হাপুরে বিরাট জনসভা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা । সভাস্থলে বিরাট বিরাট হোর্ডিং লাগানো হয়েছিল, যার পিছনে বিজেপি কয়েক লাখ টাকা খরচ করেছে। সেখানে তিনি বলেন, ২০২২ এ জিতব আমরাই। এটা মানুষের জয়, উত্তরপ্রদেশের মানুষের স্বপ্ন, উন্নয়নেরও জয় হবে। কৃষক, মহিলা, যুবসমাজ, উত্তরপ্রদেশের আত্মমর্যাদা জিতবে। পরাজয় হবে জাতপাত,গুন্ডাবাজি, তোষণ, মাফিয়ারাজের। জাতীয়তাবাদের বড় জয় হবে, জিন্নাপন্থীরা গালে কষে থাপ্পড় খাবে।
কিন্তু নাড্ডার ভাষণ শুনে সভা শেষের পর তাতে যোগ দিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দারা সব হোর্ডিং খুলে নিয়ে যান রান্নার উনুনে জ্বালানী সামগ্রী হিসাবে ব্যবহার করবেন বলে। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার রিফিলিংয়ের প্রচুর খরচ, তাই এটাই বিকল্প বলে জানিয়েছেন তাঁরা। একটি ভিডিওতে এক মহিলাকে বলতে শোনা গিয়েছে, একটা সিলিন্ডারের দাম হাজার টাকা। ফুরিয়ে গেলে আবার সিলিন্ডার ভরানো সম্ভব নয়। এই কাঠ দিয়ে ঘরে রান্নার কাজ হয়ে যাবে। আর্থিক সঙ্কটের তীব্রতার একটা চেহারা বোঝা যাচ্ছে এর মাধ্যমে।
২০১৬য় অনেক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা শুরু হয়। এতে গরিবি রেখার নীচে থাকা পরিবারের মহিলাদের বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস দেওয়া হয়। তবে নানা রিপোর্টে প্রকাশ, এই যোজনা শুরু হওয়ার পরও মূল্যবৃদ্ধি সহ নানা ফ্যাক্টরে চুলা বা মাটির উনুনের ব্যবহার বন্ধ হয়নি। এই সিলিন্ডারের রেগুলেটর, ইনস্টলেশন চার্জ বাবদ ১৬০০ টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট দেয় সরকার। তবে কানেকশন পাওয়ার পর থেকে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করেই রিফিল সিলিন্ডার কিনতে হয়। উত্তরপ্রদেশে সিলিন্ডারের দাম পড়ে ৯০০ টাকা, যা অনেক বিপিএল পরিবারের সাধ্যের বাইরে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি গবেষণা সংস্থার চালানো সমীক্ষাতেও বেরয়, বিহার, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ অর্থাত্ হিন্দি বলয়ের বিস্তীর্ণ গ্রাম-গ্রামাঞ্চলে ৭৩ শতাংশ উজ্জ্বলা প্রকল্পভোগীই রান্নার কাজে ঘুঁটে, কাঠ-গাছের ডালপালা ব্যবহার করেন।