টানা ৫ দিন ধরে লাগাতার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু বাঘে-মানুষের লুকোচুরি খেলা যেন কিছুতেই শেষ হচ্ছিল না। সুন্দরবন লাগোয়া কুলতলির জঙ্গলে কোথায় যে ঘাপটি মেরে রয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, শেষমেশ তা বাতলিয়ে দেন এলাকার তৃণমূল নেতাই।
প্রসঙ্গত, দল বেঁধে বনকর্মীরা যখন প্রথম ডোমাজোড়া শেখ পাড়ায় আসেন, তখন কোথাও-ই বাঘের দেখা মিলছিল না। এরপর নিরাশ হয়ে যখন বনকর্মীরা বলাবলি শুরু করেন এখানে বাঘ নেই, তখন এলাকারই তৃণমূল নেতা শাহদাত শেখ যিনি প্রাক্তন বনকর্মীও বটে, তিনি বলেন, এখানেই বাঘ আছে। প্রমাণ করে দেব।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুল মণ্ডল জানান, ‘তিন দিন আগের কথা। বাঘটাকে একবার দেখা গেছিল। তারপর আর পাওয়া যাচ্ছিল না। বনকর্মী, পুলিশ সবাই এসে এলাকা ঘুরে বললেন, বাঘ নেই। অন্য কোথাও গেছে। তখন আমাদের গ্রামের নেতা মানুষ শাহদাত শেখ বলেন এখানেই বাঘ আছে। আমায় অনুমতি দিন, প্রমাণ করে দিচ্ছি।’
তারপর? আমিরুল জানালেন, এরপর গ্রামের জনা পঞ্চাশ লোককে ডেকে নেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা। সামনে তিনি এগোতে থাকেন। হাতে লাঠি। পিছনে আরও জনা পঞ্চাশ গ্রামবাসী। তার পিছনে বনকর্মীরা এবং পুলিশ। কিছুটা এগোতেই একটা ঘন ঝোপের সামনে দেখা যায় বাঘের পায়ের ছাপ। আশপাশে আরও ছাপ দেখতে পান তাঁরা।
তা দেখেই বনকর্মীদের উদ্দেশ্যে শাহদাত সেদিন বলেন, এখানেই বাঘ রয়েছে। কোথাও যায়নি। যেই না বলা ওমনি গর্জন করে বসল বাঘ। যে বনকর্মীরা খানিকক্ষণ আগে বলে দিয়েছিলেন, এখানে বাঘ নেই তাঁরা এবার মুখ চাওয়াচাওয়ি শুরু করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় নেতা বলে ওঠেন, বললাম না এখানেই আছে!
লোকালয়ে বাঘ ঢুকলে তাকে ধরতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করা। ডোমাজোড়া শেখ পাড়ায় সেই কাজটা হাতে-কলমে করেছেন এই তৃণমূল নেতা। অবশেষে মঙ্গলবার বাঘটিকে ধরা গেছে। ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু বাঘকে লঞ্চে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ঝড়খালির জঙ্গলে।