একদা বাম দুর্গ বলে পরিচিত শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তিনি। তবে সেই দুর্গে ফাটল ধরায় বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়িতে এক সময়ের রাজনৈতিক শিষ্য বিজেপির শংকর ঘোষের ভোটে পরাজিত হতে হয় তাঁকে। তাই আসন্ন পুরযুদ্ধে তিনি প্রার্থী না হয়ে ‘ননপ্লেয়িং’ হিসেবে থাকবেন বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র তথা সিপিআইএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তবে এবার পুরভোটে লড়ার জন্য অশোককে পরামর্শ দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিপিএম সূত্রের খবর, রবিবার সকালে অশোককে ফোন করে শিলিগুড়িতে আবার বামফ্রন্টের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা বলেন বুদ্ধদেব। অশোকও পরে জানান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ফোন করেছিলেন। পুরভোটে লড়ার পাশাপাশি শিলিগুড়িতে দলকে জেতানোর কথাও অশোককে বলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটে হারার পর দলের কাজ করলেও আগের চেয়ে দৌড়ঝাঁপ কমিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী রত্না ভট্টাচার্য প্রয়াত হয়েছেন। এমনকী বয়স-নীতির কারণে জেলা কমিটি থেকেও অব্যাহতি নিতে হয়েছে তাঁকে। এ সবের প্রেক্ষিতেই পুরভোটে নিজে না লড়ে ‘নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন’ হিসেবে পরামর্শদাতার ভূমিকায় থাকতে চান বলে জানিয়েছিলেন অশোক। কিন্তু শিলিগুড়িতে এখনও তাঁর বিকল্প তেমন কোনও মুখ বামেদের কাছে না থাকায় বামফ্রন্টের তরফে অশোককে নতুন করে রাজি করানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে খবর। তাঁর পুরনো ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনি দাঁড়াতে পারেন বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রাক্তন মেয়র এখনও মনস্থির করেননি। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে নিজে ফোন করায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেল বলে রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা।
অশোক জানিয়েছেন, ‘বুদ্ধবাবু টেলিফোন করেছিলেন। শিলিগুড়িতে আমাদের আবার জিততে হবে, সেই কথা বলেছেন। ওঁর শরীরের খোঁজ নিয়েছি। বাকিটা দলীয় আলোচনা।’ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, শিলিগুড়ি-সহ রাজ্যের বাকি পুর-নিগমগুলিতে ভোট হতে পারে আগামী ২২ জানুয়ারি। সূত্রের খবর, তৃণমূল এবার গৌতম দেবকে সামনে রেখে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিজেপি সামনে এগিয়ে দিয়েছে শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে। যিনি বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত সিপিএমে অশোকেরই অন্যতম অমুগামী ছিলেন। তাই সম্প্রতি হওয়া সিপিএমের জেলা কমিটি, জেলা সম্পাদকমণ্ডলী এবং জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকগুলিতে অনেকেই অশোককে ফের দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন।