করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন মৃতদেহ ফেলার ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ হয়ে উঠেছিল গঙ্গা! এবার নিজেদের লেখা বইতে এমনটাই দাবি করেছেন ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের প্রধান রাজীব মিশ্র এবং আইডিএএস আধিকারিক পুষ্কল উপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার ‘টাইটেল্ড গঙ্গা: রিইমাজিনিং, রিজুভেন্টাটিং, রিকানেক্টিং’ শীর্ষক বইটির আত্মপ্রকাশ হয়েছে দিল্লীতে। তাতেই বিশেষজ্ঞদের কলমে এই বক্তব্য নিশ্চিত করে গঙ্গার দূষণ নিয়ে ওঠা নানা অভিযোগকে। লেখক রাজীব মিস্র ১৯৮৭ ব্যাচের তেলঙ্গানা ক্যাডার আইএএস অফিসার। কর্মজীবনের শেষে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের ‘ন্যাশনাল মিশন অফ ক্লিন গঙ্গা’র দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর অবসর আসন্ন, ৩১ ডিসেম্বর হবে কাজের শেষ দিন।
এই বইয়েরই একটি অধ্যায়ে লেখা রয়েছে অতিমারি পর্বের কিছু ঘটনা ও তথ্য। এ সময়ে যে গঙ্গার উপরে কী ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে,তা পড়লে চমকে উঠতে হয়। এত বছর ধরে গঙ্গাকে পরিশুদ্ধ করার যে বিপুল কর্মকাণ্ড চলেছে, তা যেন কয়েক মাসেই ধ্বংস হয়ে গেছে। বইয়ের কিছু লাইন এ-ও বলছে, ‘কোভিডে বহু মৃতদেহ পচে, ফুলে ভেসে উঠেছে গঙ্গায়। উত্তরপ্রদেশ, বিহারের প্রশাসন শ্মশান ও গোরস্থানে দেহ সৎকারের সাধ্যমতো ব্যবস্থা করলেও, তা যথেষ্ট হয়নি। তাই গঙ্গাই যেন সহজ এক ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়ে উঠেছিল দেহ ফেলে দেওয়ার।’
রাজীব মিশ্র আরও লিখেছেন, ‘আমি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গুরগাঁওয়ের একটি সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। তখনও আমি খবর পেয়েছিলাম, বহু বেওয়ারিশ লাশ ভেসে উঠেছে গঙ্গায়। এটা মে মাসের কথা। সমস্ত মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছিল এই ছবি। এটা খুবই ট্রম্যাটিক ছিল আমার জন্য। আমার মন ভেঙে গেছিল।’ বইটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সৎকার ব্যবস্থার গাফিলতির কথাও। তিনি লিখেছেন, প্রিয়জনের দেহ এভাবে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়াও মানুষের অসহায়তা ছাড়া কিছু নয়। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, গঙ্গায় ফেলা বেশিরভাগ দেহই ছিল উত্তরপ্রদেশের। বিহারে যে দেহগুলি ভেসে উঠেছিল, সেগুলিও উত্তরপ্রদেশ থেকেই গিয়েছিল।