৪০০ বছরের ঐতিহ্যকে ভাঙতে চলেছে ব্যান্ডেল চার্চ। পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম গির্জাগুলির একটি ব্যান্ডেল চার্চের পোষাকি নাম দ্য ব্যাসিলিকা অফ দ্য হোলি-রোসারি, ব্যান্ডেল। ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই চার্চ। প্রতি বছরই প্রথা মেনে মধ্যরাতে বড়দিনের প্রার্থনা করা হয়। কিন্তু এবার ভাঙতে চলেছে সেই নিয়ম। এবার আর মধ্যরাতে নয় বরং ২৪ ডিসেম্বর প্রার্থনা হবে রাত ১০টায়।
প্রসঙ্গত গত বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে লোক জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। সে কারণেই গত বছর ক্রিসমাস ইভের প্রার্থনায় অংশ নিতে পারেননি সাধারণ মানুষ। কিন্তু প্রথা মেনেই চার্চের ক্রিসমাস ইভের প্রার্থনা হয়েছিল রাত বারোটাতেই। কিন্তু এ বছর বদলে যাচ্ছে সেই নিয়ম। চার্চের তরফে জানানো হয়েছে এ বছর ক্রিসমাস ইভের সময়সূচি বদল করে ১২টার পরিবর্তে রাত ১০টায় হবে প্রার্থনা।
বড়দিন উপলক্ষে রাজ্য সরকারের তরফে ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে আগামী বছরের প্রথমদিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারী পর্যন্ত নাইট কার্ফুর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে নাইট কার্ফু শিথিল হওয়া সত্ত্বেও চার্চের ঐতিহ্য ভেঙে কেনও প্রার্থনার সময় বদল করা হচ্ছে?
এই ব্যাপারে ব্যান্ডেল চার্চের ফাদার জনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মাঝরাতে হওয়া এই প্রার্থনায় সমস্ত মানুষ অংশ নিতে পারবেন না। একমাত্র খ্রিস্টানধর্মাবলম্বী মানুষেরাই অংশ নিতে পারবেন। তাদের কথা ভেবেই চার্চের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে প্রার্থনা সেরে সকলেই এই কোভিড পরিস্থিতিতে ভালভাবে বাড়িতে ফিরতে পারেন।’
ফাদার জনি আরও জানিয়েছেন যে, মহামারীর পরিস্থিতিতে সমস্ত রকম কোভিড বিধি যাতে পালিত হয় সেদিকেও চার্চের নজর রয়েছে। সে কারণেই তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চার্চের সীমানার পাশাপাশি উপাসনা গৃহ, চার্চের নতুন হল এবং অডিটোরিয়ামে এই তিন জায়গায় প্রার্থনার আয়োজন করেছেন। যাতে প্রচুর মানুষ সমাগম হলেও ভিড় এড়ানো সম্ভব হয়।
তবে ব্যান্ডেল চার্চ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে আগামী ২৫ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি চার্চের মাঠে অবাধ প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। এই দুই দিন বাইরে থেকেই চার্চ দর্শন করতে হবে সাধারণ মানুষকে। তবে চার্চের তরফে চার্চের বাইরেই যিশুর জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে একটি গোশালা তৈরি করা হয়েছে। সেখানেই প্রভু যিশুর কাছে ওই দুই দিন প্রার্থনা করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।