এর আগে একুশের ভোটে বিজেপির ভরাডুবির সাক্ষী থেকেছিল গোটা রাজ্য। মোদী-শাহদের হুঙ্কারের পরেও মাঠে মারা গিয়েছিল তাদের ২০০-র বেশি আসন জয়ের স্বপ্ন। এবার কলকাতা পুরভোটের ফলে স্পষ্ট হয়ে গেল বাংলায় পদ্ম শিবিরের পায়ের তলার মাটি হারানোর ছবিটা। ২০১০ সালে এই রাজ্যে কার্যত ঢাল-তলোয়ারহীন বিজেপি কলকাতায় তিনটি ওয়ার্ড জিতেছিল। মাঝে ২০১৫ সালে তা সাতে উঠেছিল। কিন্তু ২০২১ সালে এসে ফের সেই তিনেই বিজেপি। তবে ভোটের ময়দানে নামার আগেই একপ্রকার হার স্বীকার করে নিয়েছিল তারা। কারণ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পুরভোটে দলের প্রার্থীদের সামনে মাত্র ১০টি আসনে জেতার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দিয়েছিলেন। কার্যত শুভেন্দুর এই ঘোষণা প্রমাণ করে দিয়েছিল বিজেপি আদতে লড়তে নামছে না, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে ভোট ময়দানে অবতীর্ণ হচ্ছে। ফলাফলেও কার্যত তারই ছায়া পড়ল।
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরভোটে সব থেকে চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছে বিজেপির দিক থেকে মানুষের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পেয়েছিল প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোট। অথচ মাত্র ৭ মাসের মধ্যে কলকাতা পুর নির্বাচনে তাঁদের প্রাপ্তি ৮ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ ৩১ শতাংশ মানুষ বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অথচ এই সময়ের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাম আর কংগ্রেস উভয়েই। রাজ্য বিধানসভা থেকে দুই দলই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বামেরা এই পুরভোটে ১০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপিকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, শহরের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে হয় বাম নয় কংগ্রেস। বিজেপি সেখানে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। এই ছবিটাই বলে দিচ্ছে রাজ্য রাজনীতিতেও এবার বড়সড় ধাক্কা খাওয়ার পথে বিজেপি। বাংলায় ক্রমশই জমি হারাচ্ছে তাঁরা। আগামী দিনেও যে সব নির্বাচন হবে বাংলায় সেখানেও এই ছবি ফুটে ওঠার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি। প্রশ্ন উঠছে, ২০২৪ সালে বিজেপি ১৮টি আসনের সবকটি ধরে রাখতে পারবে তো?