আন্দোলনে শেষে ঘরে ফিরলেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত। দিল্লী-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানায় আন্দোলন শুরুর প্রায় ৩৮৩ দিন পর ‘ঘর ওয়াপসি’ হল তাঁর। আর ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের (বিকেইউ) এই সর্বভারতীয় শীর্ষনেতার ফেরাকে কেন্দ্র করে উচ্ছ্বাসে মাতলেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। বুধবার দিল্লী-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানা থেকে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগর পর্যন্ত নজিরবিহীনভাবে গাড়ির মিছিল করেন রাকেশ টিকায়েত। গোটা যাত্রাপথে বিভিন্ন জায়গায় পুষ্পবৃষ্টি হল টিকায়েতের উপর। কোথাও সংলগ্ন উড়ালপুল থেকে রাকেশ টিকায়েতের গাড়ির উপর ছোঁড়া হল ফুল, কখনও দেওয়া হল ফুলের মালা। হুডখোলা গাড়ির উপর দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ ও আন্দোলনকারী কৃষকদের অভিবাদন গ্রহণ করলেন টিকায়েত। গাড়িতে বসেই জোড় হাত করে প্রণাম করলেন উপস্থিত মানুষকে। উচ্ছ্বাসের কারণে রাস্তার বিভিন্ন অংশে থামাতে হল টিকায়েতের গাড়ি। সর্বত্রই তাঁকে ঘিরে ছিল বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। যাত্রাপথের অন্তত শ’খানেক স্থানে আয়োজন করা হয়েছিল লঙ্গরেরও।
উল্লেখ্য, এদিন গাজিপুর সীমানা ছাড়ার সময়ও মোদী সরকারের উদ্দেশে রীতিমতো ইঙ্গিতপূর্ণ হুঁশিয়ারি দিয়ে গিয়েছেন তিনি। বলেছেন, “কৃষক আন্দোলন স্থগিত হয়েছে মাত্র। প্রত্যাহার করা হয়নি। সরকার যেন তা মাথায় রাখে।” একইসঙ্গে এদিন রাকেশ টিকায়েত বলেছেন, “তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের পর কেন্দ্র কৃষকদের বাকি দাবিগুলিও মেনে নিয়েছে মানে এই নয় যে, আমরা আর সরকার বিরোধিতা করব না। লখিমপুর-খেরি ইস্যুতে কৃষকদের আন্দোলন চলবে।” অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চাও। মূলত লখিমপুর-খেরি কাণ্ডে বিশেষ তদন্তকারী দল যে মর্মে রিপোর্ট দিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের মোদীবিরোধী সুর আরও চড়া করছে কিষাণ মোর্চা। তারা ফের দাবি করেছে, লখিমপুর কাণ্ডের ‘সূত্রধর’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। এবং তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করতে হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার কৃষক নেতৃত্বকে জানিয়েছিল, যেহেতু লখিমপুর-খেরির বিষয়টি বর্তমানে আদালতের বিচারাধীন, তাই তার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেন্দ্র কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে না। অর্থাৎ, এ ব্যাপারে ফের মোদী সরকারকে কোণঠাসা করার রাস্তাতেই হাঁটতে চলেছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। এদিন রাকেশ টিকায়েতের মন্তব্য থেকে তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেল।