বুধবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের সরব হল তৃণমূল তৃণমূল কংগ্রেস। বিএসএফের এলাকা বৃদ্ধির নামে পুলিশি ব্যবস্থার কেন্দ্রীয়করণের ষড়যন্ত্র করছে মোদী সরকার, এই মর্মেই প্রতিবাদ জানাল তারা। বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তৃণমূল স্পষ্টতই জানিয়ে দিল, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপর আঘাত কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। বিএসএফ ইস্যুতে মোদী সরকারের আসল উদ্দেশ্য কী? এমন সওয়াল খাড়া করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক তথা দলের অন্যতম মুখপাত্র সুখেন্দু শেখর রায়।
এদিন সুখেন্দুবাবু বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ বিজেপিকে যেভাবে ধাক্কা দিয়েছে, তা ভুলতে পারছেন না নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। তাই প্রতিশোধ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন। বিধানসভা ভোটে শীতলকুচিতে বিনা প্ররোচনায় কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছে। বিএসএফের ক্ষেত্রেও তা হবে না, সেই গ্যারান্টি কে দেবে? বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে তুলে নিয়ে গিয়ে গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ কি কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে কম আছে নাকি? মানবাধিকার সংক্রান্ত নানা প্রতিষ্ঠানের কাছে এ ধরনের অনেক উদাহরণ আছে। তাই বিএসএফ ইস্যুতে প্রতিবাদ চলবেই।”
উল্লেখ্য, বাংলা, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যের সীমান্তে পাহারাদারির ক্ষেত্রে বিএসএফের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করেছে কেন্দ্র। এ নিয়ে গোড়াতেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দিয়েছেন। যদিও তার পরেও অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও সরেনি কেন্দ্র। তাই সরকারের উপর চাপ বজায় রাখতেই এদিন সংসদে চেপে ধরে তৃণমূল। জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই লিখিতভাবে জানিয়েছেন, বাংলা এবং পাঞ্জাবে আফস্পা (দ্য আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট) প্রয়োগ করা হবে না। তবে বিএসএফ তার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার মধ্যে সিআরপিসি (ফৌজদারি আইন) কার্যকর করতেই পারে। প্রয়োজনে চালাতে পারে তল্লাশি। একইসঙ্গে কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজ্যের অধিকারে কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। রাজ্যকে সহযোগিতা করতেই এই এলাকা বৃদ্ধি।
এছাড়াও কেন্দ্রের ব্যাখ্যা, অনেক সময়ই সীমান্তে গোরু সহ গবাদি পশু পাচারকারীরা বিএসএফ এলাকার বাইরে গিয়ে গ্রামের মধ্যে দিয়ে লুকিয়ে চোরাচালান করে। তাছাড়া দেশদ্রোহীদের কার্যকলাপ রোখাও লক্ষ্য। ড্রোনের মাধ্যমে দুষ্কৃতীদের হামলার সম্ভাবনা এড়াতেই বিএসএফের নজরদারির এলাকা বাড়ানো হয়েছে। বেআইনি অস্ত্র, জাল নোট পাচার বন্ধের মতো বিষয় তো রয়েছেই। তবে আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না বলে যতই সাফাই দিক মোদী সরকার, বিএসএফ ইস্যুতে ইস্তক অনড় তৃণমূল।