সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব খোয়ানোর পর এতদিন নীরবই ছিলেন তিনি। বিরাটের সেই নীরবতা যে ঝড় বয়ে আনতে পারে ছিল, তা আন্দাজ করাই গিয়েছিল। হলও তেমনই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ খেলতে ভারতীয় দল উড়ে যাওয়ার আগে টিম ইন্ডিয়ার টেস্ট অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, নির্বাচকরা মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে তাঁকে জানান যে তিনি আর ওয়ানডে অধিনায়ক থাকছেন না। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রোটিয়া সফরে উড়ে যাওয়ার আগে বিরাট দাবি করেছেন, ওয়ানডে অধিনায়কের পদ থেকে যে সরানো হচ্ছে, সেটা তাঁকে আগে জানায়নি বোর্ড। নির্বাচক কমিটির বৈঠকের মাত্র দেড় ঘণ্টা আগে জানানো হয় তিনি আর অধিনায়ক থাকছেন না। বিরাট বলছেন, “নির্বাচক কমিটির বৈঠকের দেড় ঘণ্টা আগে আমাকে বলা হয়, আমাকে ওয়ানডে অধিনায়ক রাখা হচ্ছে না। তার আগে আমার সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা হয় না। নির্বাচক কমিটির বৈঠকেই আমরা এটা নিয়ে খানিকটা আলোচনা করেছি। তবে নির্বাচক কমিটির বৈঠকের আগে আমাকে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে, এতে আমার কোনও সমস্যা নেই।”
পাশাপাশি বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যে দাবি করেছিলেন, বিরাটকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব না ছাড়তে অনুরোধ করা হয়েছিল, সেই দাবিও খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের টেস্ট অধিনায়ক। তাঁর সাফ কথা, কেউ তাঁকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব না ছাড়তে অনুরোধ করেননি। অর্থাৎ বোর্ড সভাপতির ঠিক উলটো কথা বলছেন ভারতের টেস্ট দলের অধিনায়ক। বিরাট এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, রোহিতের সঙ্গে কাজ করতে তাঁর কোনও সমস্যা নেই। তাঁদের দু’জনের মধ্যে যে কোনও বিবাদ নেই, সেটা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। অভিমানের সুরও এদিন শোনা গিয়েছে টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম সেরা ব্যাটারের গলায়। বিরাট বলে দিয়েছেন,”আমি দেশকে কোনও আইসিসি ট্রফি দিতে পারিনি। তাই হয়তো আমাকে সরানো হয়েছে। আমি বোর্ডের যুক্তিটা বুঝতে পারছি। আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি, আমার কোনও কাজে বা কোনও পদক্ষেপে কখনও ভারতীয় ক্রিকেটের খারাপ হবে না।” পরিসংখ্যান বলছে, ৯৫টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ৬৫টিতে জয়, ২৭টি হার। শতকরা ৭০ শতাংশেরও বেশি ম্যাচ জিতেছেন তিনি। যা কপিল দেব, ধোনিদের মতো বিশ্বজয়ী অধিনায়কের থেকে বেশি। বিশ্বকাপে সফল না হলেও ১৯টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মধ্যে ১৫টি জিতেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, অধিনায়ক থাকাকালীন ২১টি সেঞ্চুরি করেছেন বিরাট। ব্যাটিং গড় ৭২.৬৫। এ হেন সাফল্যের পর অধিনায়ক বিরাটের কি আরেকটু সম্মানজনক বিদায় প্রাপ্য ছিল না? প্রশ্ন উঠছে বারবার।
