একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই ভাঙন অব্যাহত গেরুয়া শিবিরে। দিকে দিকে দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগদান করছেন একের পর এক নেতা কর্মী। এবার সেই পথ ধরেই তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন হাওড়া সদরের বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহা। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় দল থেকে বহিষ্কৃত হতে হয়েছিল সুরজিৎকে। নারদকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু অধিকারীকে কার্যত ‘চোর’ বলে তোপ দেগেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার শরৎ সদনে রাজ্যের শাসক দলের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেবেন তিনি, এমনটাই জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, সুরজিৎ সাহা তৃণমূলের যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর সেই আবেদনপত্র দলনেত্রীর কাছে পাঠানো হয়। এছাড়াও জেলা তৃণমূল সভাপতির নজরে বিষয়টি আনা হয়। দলের তরফে সুরজিতের যোগদানে সম্মতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। অরূপ জানান, ‘সুরজিৎ উপলব্ধি করেছেন একমাত্র তৃণমূলই পারে রাজ্যের প্রকৃত উন্নয়ন করতে।’
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই দলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছিলেন একাধিক গেরুয়া শিবিরের নেতা। এরই মধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে সুরজিৎ সাহা বলেছিলেন, ‘বিজেপি বি টিমের অধীনে কাজ করব না। কে প্রকৃত বিজেপি কর্মী তার সার্টিফিকেট শুভেন্দুর থেকে নেব না। আগে তিনি নিজের সততার প্রমাণ দিন। ৬ মাস দলে আসা নেতার থেকে বিজেপি করা শিখব না। বরং তাঁকে প্রমাণ করতে হবে, তিনি কত বড় সৎ নেতা ৷ তিনি যাঁদের তৃণমূল থেকে নিয়ে এসেছিলেন, সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী, মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এবার তিনি বিজেপিতে থাকবেন, নাকি চলে যাবেন সেই সার্টিফিকেট বিজেপি কর্মীরা তাঁর থেকে চায়।’ সুরজিৎ সাহার এই মন্তব্যের পরেই কার্যত তোলপাড় হয়ে যায় বঙ্গ রাজনীতি। অস্বস্তি এড়াতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তড়িঘড়ি তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর আস্থা রেখে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন তিনি।