এবার ফসল কেটে নেওয়ার পরবর্তী পদক্ষেপের খরচ জোগাতে কৃষক গোষ্ঠী সংগঠনগুলিকে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। নতুন এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কৃষি পরিকাঠামো অনুদান’। এই মর্মে নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সর্বোচ্চে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মিলবে এবং তা ৩ শতাংশ সুদের হারে সাত বছরে পরিশোধ করতে পারবেন একজন উপভোক্তা। বিষয়টি নিয়ে সোমবার মুখ্যসচিব প্রত্যেক জেলার সঙ্গে অনলাইন বৈঠক করেন। এই প্রকল্পের জন্য কী করতে হবে, তার স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছেন। ১৫ই ডিসেম্বরের মধ্যে উপভোক্তাদের চিহ্নিতকরণ এবং ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের থেকে প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট জমা নেওয়ার কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। কৃষি, মৎস্য, উদ্যানপালন, প্রাণিসম্পদ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঋণ নিতে পারবেন। তবে তাঁদের প্রাইমারি এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট সোসাইটি, ফার্মার্স প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন অথবা জয়েন্ট লায়াবিলিটি গ্রুপের সদস্য হতে হবে। এই সংগঠনের তরফে ঋণের আবেদন করতে হবে।
পাশাপাশি, কোনও কৃষক যদি উদ্যোগপতি হন, তিনিও তাঁর প্রকল্পের জন্য ঋণের আবেদন করতে পারবেন। হিমঘর তৈরি, মাছ বিক্রি করতে সাইকেল বা ভ্যান কেনা। দ্রব্য সামগ্রী প্যাকেজিং কিংবা প্রক্রিয়াকরণ করতে পরিকাঠামো তৈরি, কোল্ড চেন ইত্যাদি পরিকাঠামো গড়ে তুলতে এই আর্থিক সাহায্য মিলবে। তবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২৪ শতাংশ তফসিলি জাতি ও উপজাতি উপভোক্তাদের সাহায্য করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য। পাশাপাশি, পিছিয়ে পড়া ও মহিলা উদ্যোগপতিদের সাহায্য যাতে করা যায়, তার জন্য বিশেষ নজর দেওয়ার কথাও নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। তবে জেলা থেকে কোন প্রকল্প আসছে, কাদেরটা বাছাই করা হবে, তার জন্য দু’রকমের কমিটি গঠিত হয়েছে। প্রথমটি রাজ্য স্তরে এবং দ্বিতীয়টি জেলাভিত্তিক। জেলা নজরদারি কমিটির দায়িত্ব হল, জেলায় উপভোক্তাদের চিহ্নিতকরণ করে তাঁদের থেকে প্রকল্পের রিপোর্ট সংগ্রহ করা। জেলাস্তরে যাতে এই প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে নামানো যায়, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তারা। এদিকে, স্টেট লেভেল মনিটরিং কমিটি রাজ্যস্তরে এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবে। জেলার সঙ্গে সমন্বয় এবং নিয়মিত বৈঠক করে জেলাওয়াড়ি লক্ষ্যমাত্রা স্থির করবে এই কমিটি।