ক্রমশই দেশের সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বেসরকারিকরণ করার পথে হাঁটছে মোদী সরকার। স্বাভাবিকভাবেই যা নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। সরকারের এমন নীতিতে জমা টাকার নিরাপত্তা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত দেশবাসী। যদিও এই অবস্থায় রবিবার দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি জানালেন, কোনও ব্যাঙ্ক দেউলিয়া পরিস্থিতিতে চলে গেলে ৯০ দিনের মধ্যে বিমার ৫ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। যদিও মোদীর এই আশ্বাসে ঘোরতর আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছেন আমানতকারীরা।
রবিবার এক অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি কোন কারণে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের টাকা শোধ করতে নাও পারে সেক্ষেত্রেও সবার টাকা সুরক্ষিত। সরকার ৯৮.১ শতাংশ গ্রাহকের টাকাই সুরক্ষিত করে ফেলেছে বিমার মাধ্যমে। গ্রাহকদের মোট ৭৬ লক্ষ কোটি টাকা ইতিমধ্যেই বিমা সুরক্ষার আওতায় এসেছে। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এই বিমার টাকা পাঁচ লক্ষ করে দেওয়া হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যে যাতে গ্রাহকরা টাকা ফেরত পান। তবে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস দিলেও এক্ষেত্রে একাধিক আশঙ্কা উঁকি দিচ্ছে। প্রথমত, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের মধ্যে ফারাক অনেক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে কোন কারণে ব্যাঙ্কের ভরাডুবি হলে তার দায় থাকে সরকারের। কিন্তু বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে এই দায় সরকারের থাকে না। সে ক্ষেত্রে কেউ যদি ৫০ লক্ষ টাকা রাখেন এবং ব্যাঙ্ক যদি দেউলিয়া হয় হিসেব মতো ৫ লক্ষ টাকা বিমা পাবেন তিনি। মোদীর এই আশ্বাস আসলে ভরাডুবির আশঙ্কাকে আরো বেশি করে বাড়িয়ে তুলছে। এদিন বিরোধীদের তরফে তোলা হয়েছে এমনই অভিযোগ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত দু’বছর ধরেই রুগ্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে বেসরকারিকরণ এবং সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে মোদী সরকার। শীঘ্রই আরও একাধিক ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের পথে এগোবে বলে ইঙ্গিত সূত্রের। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক নিয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী। অবশ্য সেই আশ্বাস থেকে আশ্বস্ত হওয়ার পরিবর্তে বেসরকারিকরণ নীতিতে আতঙ্ক ঘনীভূত হল সাধারণ মানুষের।