আগামী ১৯ ডিসেম্বর কলকাতার পুরভোট। তার আগে আজ, শনিবার দলীয় ইস্তাহার প্রকাশ করতে চলেছে তৃণমূল। তবে তা প্রথাগত নির্বাচনী ইস্তাহার নয়। বরং কলকাতার পুরভোটের জন্যে বানানো হয়েছে গত ছ’বছরের ‘রিপোর্ট কার্ড’। দলীয় সূত্রে খবর, প্রথাগত ইস্তাহার তৈরি না করে মানুষের কাছে রিপোর্ট কার্ড পেশ করতে চলেছে রাজ্যের শাসক দল। এই রিপোর্ট কার্ড তৈরির জন্য পুরসভার সব বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে কাজের খতিয়ান। একদিকে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন এবং অন্যদিকে পুর উন্নয়ন— এই দ্বিমুখী কৌশলেই কলকাতাবাসীর মন জয় করে পুরবোর্ড দখল করতে আগ্রহী ঘাসফুল শিবির। ভিশন ডকুমেন্ট আকারে এই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হবে।
তবে কলকাতা পুরসভার বিদায়ী পৌর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, একাধিক পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে। তার উপরে ভিত্তি করেই জোর দেওয়া হবে নতুন পুর বোর্ডের কাজে। সূত্রের খবর, ফি বছর জল জমে কলকাতার বেশ কিছু অংশে। বেহালা, খিদিরপুর, তারাতলা, আর্মহাস্ট্র স্ট্রিট, ঠনঠনিয়ার মতো জায়গায়। নতুন পুরবোর্ড গঠন করতে পারলে আগামী দিনে এই সমস্যা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে চাইছে তৃণমূল। দ্বিতীয়ত, পানীয় জলের পর্যাপ্ত জোগান। পরিশ্রুত পানীয় জল মেলে সর্বত্র। কিন্তু শহরের বেশ কতগুলি ওয়ার্ডে সেই জলের পরিমাণ কম। আগামী দিনে এই সমস্ত এলাকায় জল সরবরাহের গতি বাড়াতে চায় শাসক দল।
একই সঙ্গে তৃণমূল জোর দিচ্ছে পরিবেশের ওপরে। কলকাতা শহরের দূষণ রুখতে ব্যবস্থা নিতে চায় তারা। সেই কারণেই গাছের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনাও রয়েছে। ই-ভেহিক্যালের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনায় নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি নতুন পুর বোর্ড গঠন করতে পারলে হেরিটেজ সংরক্ষণে জোর দিতে চায় শাসক দল৷ শহর কলকাতায় একাধিক হেরিটেজ ভবন আছে। সেগুলিকেই সংরক্ষিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর সঙ্গে শহরের দৃশ্য দূষণ রুখতে চায় তারা। ফিরহাদ জানিয়েছেন, ‘তারের জঞ্জাল সরাতেই হবে। হোর্ডিং, পোস্টার যত্রতত্র দেওয়া চলবে না।’ এই সকল বিষয়কে সামনে রেখেই এগোতে চায় রাজ্যের শাসক দল।
পুরসভা সূত্রে খবর, ১২টি বিভাগের কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হবে। মূলত পানীয় জল, আলো, রাস্তা, স্বাস্থ্য, নিকাশি এবং জঞ্জাল অপসারণ, বস্তি উন্নয়নে শহর জুড়ে যে কাজ হয়েছে, সেই তালিকাই ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিতে চায় শাসকদল। পাশাপাশি যে বড় কাজগুলি বিগত বছরে করা হয়েছে, তার সংক্ষিপ্তসার থাকবে লিফলেটে। যা পুরসভার ফেসবুক পেজ-সহ বিভিন্ন রাস্তায় ব্যানার আকারে লাগিয়ে প্রচার করা হবে। পাড়ায় পাড়ায় লিফলেটও বিলি করবে জোড়াফুল শিবির। পিকের সংস্থা আইপ্যাক ইতিমধ্যেই ওয়ার্ড স্তরে একাধিক সমীক্ষা করেছে। সেখানে পুর পরিষেবার নিরিখে অবস্থা যাচাই করা হয়েছে। ফলে কোথায় কী কাজ হয়েছে এবং কোথায় কী কাজ দরকার, তার স্পষ্ট ধারণা দেওয়া হবে এই প্রচার পুস্তিকায়।