ফের বিতর্কে মোদী সরকার। কর্মে নয়, প্রচারে বিশ্বাসী কেন্দ্র? কেন্দ্রের তথ্য পরিসংখ্যান অন্তত তেমনই বলছে। বিজেপি সরকার প্রকল্পের আওতায় উপভোক্তাদের সুবিধা প্রদান করার বদলে চটকসর্বস্ব বিজ্ঞাপনেই কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। প্রচার সর্বস্ব বিজেপি সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ৭৯ শতাংশ টাকাই ব্যয় করা করেছে বিজ্ঞাপনে! এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো সম্প্রতি সংসদীয় কমিটিতে প্রকাশিত রিপোর্টে। ২০১৬-১৯ সময়ের মধ্যে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প বাবদ বরাদ্দ ৪৬৬.৭২ কোটি টাকার, ৭৮.৯১ শতাংশই বিজেপি সরকার ব্যবহার করেছে বিজ্ঞাপন এবং প্রচারে।
উল্লেখ্য, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। কন্যা সন্তানদের সব রকম সুরক্ষা নিশ্চিত করাই এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য। মেয়েদের শিক্ষার আধিকারকে সুনিশ্চিত করতেই এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রকল্পটি গ্রহণের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল দেশের লিঙ্গসাম্যতা অনুপাতের ভরসাম্য রক্ষা করা। দেশে চাইল্ড সেক্স অনুপাতের ভরসাম্য ধারাবাহিক ভাবে হ্রাস পাচ্ছে ১৯৬১-এ যা ছিল ৯৭৬, ২০০১-এ ৯২৭ হয়ে ২০১১সালে তা ৯১৮-এ পৌঁছেছে। যা সত্যিই চরম উদ্বেগের ব্যাপার। পার্লামেন্টারি কমিটির পর্যবেক্ষণ হল, যেহেতু ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ একটি জনসচেতনতামূলক প্রকল্প তাই সচেতনতা বাড়াতে, প্রকল্পের বিষয়ে মানুষকে জানাতে প্রচার করা প্রয়োজন, কিন্তু তার মানে এই নয় যে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের প্রায় ৭৯ শতাংশই বিজ্ঞাপন আর প্রচারে খরচ করা হবে।
কমিটির তরফে ঐ রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো হয়েছে, বিজ্ঞাপন ছেড়ে সরকারের উচিত এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্যগুলিকে পূরণ করা, অর্থাৎ প্রকল্পের খাতে বরাদ্দ অর্থ যথার্থভাবে ব্যয় করা। মেয়েদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নের দিকটি সুনিশ্চিত করা। সেই মর্মে সংসদীয় কমিটির তরফে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরকে বলা হয়েছে, রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল গুলির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যত দ্রুত সম্ভব ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পকে সর্বত্র বাস্তবায়িত করতে হবে। কেবল বিজ্ঞাপনী প্রচার নয়, অগ্রাধিকার দিতে হবে কন্যাসন্তানদের উন্নয়নকেই।