আসন্ন কলকাতা পুরনির্বাচন শেষ হয়ে গেলেই পরবর্তী কয়েকমাসের মধ্যেই রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলির ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে পারে। তার আগেই ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্পে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ১১টি পুরসভাকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক বরাদ্দের অনুমোদন দিল রাজ্য সরকার। ওই টাকায় স্থানীয় মানুষের দাবি মতো বিভিন্ন পুর-এলাকায় প্রায় ২৮০টি সমস্যার সমাধান হবে। রাস্তা, নিকাশি নির্মাণ ও সংস্কারের মতো দরকারি কাজগুলি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু করতে প্রশাসনের অন্দরে জোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি কাজের ওয়ার্ক অর্ডারও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিকে হাতিয়ার করেই আগামী দিনে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে চাইছে শাসকদল তৃণমূল। প্রশাসন সূত্র অনুযায়ী, এর আগে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচীতে পুরসভা এলাকার নানা সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন বাসিন্দারা। সেই সব সমস্যা প্রশাসন খতিয়ে দেখে। তারপর অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি হয়। সেগুলির সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার জেলার ১১টি পুরসভার জন্য প্রায় ৯ কোটি ২৭ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। ওই কাজ দ্রুত রূপায়ণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এমইডি ও কেএমডিএ’কে। ঠিকাদার সংস্থাকে ওইসব কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী প্রশাসনের কর্তারা।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুরসভার ভোটে হিংসা বা বলপ্রয়োগ কোনওভাবে বরদাস্ত করা হবে না বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশমতো জেলাতেও সেই বার্তা দলের নেতা-কর্মীদের কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। একাধিক সাংগঠনিক সভায় নিয়ম করে নেতারা বলছেন, গায়ের জোরে এবার ভোট করালে দলের পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তাই মানুষের জনসমর্থন পেতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতার পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নও প্রধান্য পাবে। স্থানীয়দের দাবি মতো উন্নয়নের কাজ শুরু হলে ভোটের আগেই কয়েক কদম এগিয়ে যাবে শাসক শিবির। প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, ১১টি পুরসভার মধ্যে সবথেকে বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে বসিরহাট পুরসভাকে। এখানে মোট ৯৪টি কাজের জন্য মোট ৩ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার আর্থিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একইভাবে বনগাঁ পুরসভায় ২৬টি কাজের জন্য ৯৫ লক্ষ ২১ হাজার টাকা, টাকি পুরসভার ৮৭টি কাজের জন্য ১ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা, বাদুড়িয়া পুরসভার ৫৭টি কাজের জন্য ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একইভাবে খড়দহ পুরসভার সাতটি প্রকল্পের জন্য ৭ লক্ষ ৩৯ হাজার, পানিহাটির ১১টি কাজের জন্য ৫১ লক্ষ ১৫ হাজার, বরানগরের ১০টি কাজের জন্য ৪৫ লক্ষ ৯০ হাজার, মধ্যমগ্রামের ৯টি কাজের জন্য ৩৯ লক্ষ ৫১ হাজার টাকার আর্থিক অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য।
