গত বুধবার তামিলনাড়ুর পাহাড় ঘেরা নীলগিরির জঙ্গলে ভেঙে পড়েছিল সেনার কপ্টার। আর সেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়াত। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় বিস্মিত গোটা দেশ। এবার কুন্নুর কাণ্ডে সামনে এল প্রটোকল ভাঙার অভিযোগ।
অভিযোগ, প্রটোকল অনুযায়ী জেনারেল রাওয়তের মতো ভিভিআইপি-র ক্ষেত্রে কপ্টারের আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পর্যবেক্ষণকারী কপ্টার থাকার কথা। কিন্তু দুর্ঘটনার দিন সেখানে অন্য কোনও হেলিকপ্টারের দেখা মেলেনি। যা সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রটোকলের পরিপন্থী।
বায়ুসেনার সুলুর বিমানঘাঁটি সূত্রের খবর, নিয়ম মেনেই রাওয়াতের এমআই-১৭ ভি-৫ কপ্টারের আগে আবহাওয়া ও অন্যান্য সুরক্ষা সংক্রান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য দু’টি ছোট কপ্টার পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেনাবাহিনীর ‘মাদ্রাজ রেজিমেন্টাল সেন্টার’ সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ায় বুধবার ওয়েলিংটনের ‘ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ’-এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় শুধু মাত্র রাওয়াতের কপ্টার।
প্রকাশিত অন্য একটি খবরে দাবি, বুধবার রাওয়তের কপ্টারের উড়ানের আগে দু’টি ছোট কপ্টার নীলগিরি পাহাড়ের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণে গিয়েছিল। কিন্তু তারা ওয়েলিংটনের হেলিপ্যাড না ছুঁয়েই ফিরে আসে। যদিও সেনা বা বায়ুসেনার তরফে সে খবরের সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।
সেনার ‘মাদ্রাজ রেজিমেন্টাল সেন্টার’-এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আধুনিক এমআই-১৭ ভি-৫ কপ্টারের সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁরা এতটাই নিশ্চিত ছিলেন যে ‘স্কাউটিং কপ্টার’ পাঠানোর প্রয়োজন মনে করেননি। এই ঘটনায় বায়ুসেনা এবং সেনার সমন্বয়ের অভাব দেখছেন প্রাক্তন সেনাকর্তাদের অনেকে।
মূলত রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর মতো ভিভিআইপি-দের কপ্টারের সামনে এবং পিছনে আরও তিনটি-চারটি চপার থাকে। থাকে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি কপ্টারের ওপর সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর প্রস্তুতিও। নিয়ম মতো সেনা সর্বাধিনায়কের উড়ানের আগেও পর্যবেক্ষণকারী কপ্টার থাকার কথা। কিন্তু সেই প্রটোকল যে মানা হয়নি, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
অন্যদিকে, সেনা সর্বাধিনায়কের কপ্টার দুর্ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার তরফে যৌথ তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। সেই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন বায়ুসেনার এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিংহ।