বাংলাজুড়ে দুধ, ডিম, মাংস উৎপাদনে বিশেষ জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলত চলতি অর্থবর্ষে এক লক্ষ সাত হাজার জনকে কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের (প্রাণিপালন) মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। গত বছর এই কার্ড চালু করা হয়। গোরু, মুরগি, ছাগল, শূকর প্রভৃতি পালনে আগ্রহীদের উৎসাহ দিতে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। এজন্য কিষাণ ক্রেডিট কার্ড (প্রাণিপালন) দেওয়া শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, দু’টি উচ্চমানের গাভী কিনতে ৩০০ দিনের জন্য সহজ শর্তে ৬৭ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এক হাজার ব্রয়লার মুরগি পালনের জন্য ঋণ দেওয়া হবে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। এই ঋণ ৪০ দিন মেয়াদী। ১০টি বাংলার কালো ছাগল পালন বাবদ ৩০০ দিনের জন্য ২০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। চারটি বিদেশি ঘুংরু প্রজাতির শূকর পালনের জন্য দেওয়া হয় ৪১,৬৮০ টাকা ঋণ। এই ঋণের মেয়াদ ২৪০ দিন। ঋণ পরিশোধের পর ফের ঋণ পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই চারটি ক্ষেত্রেই কিষান ক্রেডিট কার্ডের (প্রাণিপালন) মাধ্যমে ঋণ দেওয়া হয়। ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০,৫৬৩টি আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে ১১১টি ব্যাঙ্কের অনুমোদন পেয়েছে। জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর সূত্র। ওই সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার আগেই বাকিদের ঋণ দেওয়া হবে। যে লক্ষাধিক আবেদন জমা পড়েছে, তার মধ্যে ৯০ হাজার জন ঋণ চান গাভী পালনের জন্য। ছাগল পালনের জন্য ঋণ নেবেন ১০ হাজার জন। ৭ হাজার জন মুরগি পালনে আগ্রহী। তবে সবথেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। তার পরেই রয়েছে পূর্ব বর্ধমান, আলিপুরদুয়ার, হুগলী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদীয়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা।
উল্লেখ্য, গত অর্থবর্ষে এই প্রকল্পে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৫৩০টি আবেদন জমা পড়েছিল। ঋণ মঞ্জুর হয়েছিল ১৩৪ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য, আরও বেশি দুধ উৎপাদন। তাই গাভী পালনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একইরকমভাবে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে ডিম ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধির উপর। এই সংক্রান্ত ছোট ছোট ব্যবসায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। কৃষিদপ্তরের কিষান ক্রেডিট কার্ডের মতোই চালু হয়েছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড (প্রাণিপালন)। এটি চালু ও জনপ্রিয় হয়েছে কেসিসি-টু নামে। এই কার্ডের মাধ্যমে স্বল্প ঋণ পেয়ে গোরু ও মুরগি চাষীরা বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন, এমনই জানালেন বিভাগীয় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।