শনিবার নাগাল্যান্ডে জঙ্গী দমন অভিযানের নামে নিরীহ গ্রামবাসীদের ওপরে গুলি চালিয়েছে আসাম রাইফেলস। যার ফলে প্রাণ গিয়েছে ১৪ জনের। এ নিয়ে আগেই সেনার ২১ নম্বর প্যারা স্পেশাল ফোর্সের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত গণহত্যার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছিল নাগাল্যান্ড পুলিশ। তার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। এবার কেন্দ্রকে ‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ (আফস্পা) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে চিঠি দিচ্ছে বলে জানাল নাগাল্যান্ড সরকার। একই সঙ্গে রাজ্যের আদিবাসীদের প্রভাবশালী সংগঠন ‘কোনইয়াক ইউনিয়ন’ আফস্পা প্রত্যাহারের পাশাপাশি অসম রাইফেলসের জওয়ানদেরও নাগাল্যান্ডের মন জেলা থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্বে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি। নাগাল্যান্ডের রাজ্য মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে কেন্দ্রকে চিঠি লিখে রাজ্য থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিয়ো বলেছিলেন, ‘আমার রাজ্যে অশান্তির কারণ হয়ে উঠছে আফস্পা। অবিলম্বে আফস্পা প্রত্যাহার করতে হবে।’ কেন্দ্রকে যে চিঠি দেওয়া হবে, তাতেও আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হবে বলে জানিয়েছে নাগাল্যান্ডের রিয়ো সরকার। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিজেপির জোট সঙ্গী তথা এনডিএ-এর অন্যতম সদস্য রিয়ো আফস্পা নিয়ে এ কথা বললে, তার তাৎপর্য বিপুল।
এদিকে, শনিবারের ঘটনার জেরে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে নাগাল্যান্ডের হর্নবিল উৎসব। প্রতি বছর ১০ দিনের এই অনুষ্ঠানকে নাগাল্যান্ডের প্রধান উৎসব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মঙ্গলবার ছিল অনুষ্ঠানের ষষ্ঠ দিন। কিন্তু অশান্তির পরিবেশে এবারের মতো অনুষ্ঠান মাঝপথে বাতিল করে দেওয়া হল। নাগাল্যান্ডের প্রভাবশালী আদিবাসী সংগঠন ‘কোনইয়াক ইউনিয়ন’ও উত্তর-পূর্ব থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি নাগাল্যান্ডের মন জেলা থেকে আসাম রাইফেলসের জওয়ানদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি রেখেছে তারা। ‘কোনইয়াক ইউনিয়ন’ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে।