গঙ্গার ঘাটে চিৎ হয়ে পড়ে থাকা কুমিরের দেখা মিলতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হুগলির শ্রীরামপুরে। পরে বোঝা যায় কুমিরটি মৃত। মৃত হলেও কুমির তো বটে। ফলে খবর চাউর হতেই সাতসকালে কুমির দেখতে উৎসাহীরা ভিড় জমালেন শ্রীরামপুর কালিবাবুর শ্মশানঘাটে।
ঘাটের কাছেই কচুরিপানায় আটকে ছিল কুমিরের মৃতদেহটি। পরে শ্রীরামপুর পুরসভার সাফাইকর্মীদের সহায়তায় বনকর্মীরা সেটিকে পাড়ে তোলেন। কীভাবে কুমিরটি সেখানে এল, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। কুমিরের দেহ ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ জানতে চাইছে বন দফতর।
শ্রীরামপুর পুরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অনুজ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গত দুমাস ধরে ভাগীরথীর ঘাটে ঘাটে যখন কুমিরের দেখা মিলছিল হুগলির গুপ্তিপাড়াতেও গঙ্গায় নামতে নিষেধ করে প্রশাসন, চলে মাইকে প্রচার। এদিন কুমিরের দেহ পাওয়া গিয়েছে শুনে অনেকেই ভিড় জমান কালিবাবুর শ্মশানঘাটে।
কুমিরটি চিৎ হওয়া অবস্থায় পড়েছিল কচুরিপানার স্তূপে। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে শ্রীরামপুর পুরসভায় খবর দেন। পুরসভা বন দপ্তরকে জানায়। বনকর্মীরা পুরসভার সাফাইকর্মীদের সাহায্যে কুমিরটিকে জল থেকে তোলেন। বনকর্মী নেপাল মাঝি জানান, পাঁচ-ছয়দিন আগেই কুমিরটির মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান। কুমিরটি সম্ভবত ভেসে এসেছে। জলে থেকে থেকে শরীরে পচন ধরে গিয়েছে। ময়নাতদন্ত হলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।
মাস দুয়েক ধরে ভাগীরথী নদীতে কুমিরের দেখা মিলছিল। এক না একাধিক কুমির তা জানা যায়নি। অনেকে মনে করছিলেন একটাই কুমিরকে বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে। গত মাসের শেষদিকে নদিয়ার এক ঘাটে কুমির ধরার চেষ্টা চলেছিল।
সেটিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পারে তুলেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল জলে। সেই কুমিরটি অবস্থা ছিল মরোমরো। এই কুমির কি সেই কুমির? তাও স্পষ্ট হয়নি। এদিন সকালে শ্রীরামপুর কালিবাবুর শ্মশানঘাটে কুমিরের দেহ ভাসতে দেখা যায়। ঘাটের কাছে কচুরিপানায় আটকে ছিল মৃত কুমিরটি। তার গলাপচা দেহ দেখে অনেকে মনে করছেন, পাঁচ-ছয়দিন আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বন দফতরের চণ্ডীতলা বিট অফিসার সোমেশ ভট্টাচার্য বিষয়টি নিয়ে জানান, অক্টোবরের শেষে মুর্শিদাবাদে জলঙ্গীর ঘাটে প্রথম কুমির দেখা গিয়েছিল। তারপর নদিয়া আর কালনায় পালা করে কুমিরের দেখা মিলছিল।
একই কুমির বিভিন্ন ঘাটে দেখা দিচ্ছিল কিনা সেবিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় বন দফতর। তবে কুমিরের ভয়ে জলে নামতে ভয় পাচ্ছিলেন স্থানীয়রা। মাছ ধরতে যেতে আতঙ্কে ছিলেন মৎস্যজীবীরাও। কুমিরটি কোথা থেকে এসেছিল, কীভাবে মারা গেল সেসবই তদন্ত করে দেখছে বন দফতর।