তাঁর কথা মনে পড়লেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একমুঠো রঙিন শৈশব। নানান দুষ্টুমি ও মজায় ভরপুর কার্টুন চরিত্র হাঁদা ভোঁদা, নন্টে ফন্টে কিংবা বাঁটুল দ্য গ্রেট মানেই। এখনও শিশুমনের অলিগলিতে অবাধ বিচরণ এই কিংবদন্তির। তিনি কার্টুনিস্ট নারায়ণ দেবনাথ। গত জানুয়ারিতেই কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান দিয়েছে। কথা ছিল, তাঁকে দিল্লীতে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু এখনও তা হয়নি। দশ মাস পেরোলেও খেতাবই পৌঁছয়নি নারায়ণ দেবনাথের কাছে। যা নিয়ে সংশয়ে দেবনাথ পরিবারও।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর পদ্মসম্মান প্রাপক রাজ্যের সাতজনের মধ্যে পদ্মশ্রী প্রাপকদের মধ্যে ছিলেন হাওড়ার শিবপুরের বাসিন্দা নারায়ণ দেবনাথ। ৯৮ বছর বয়সী নারায়ণবাবু অসুস্থ, শয্যাশায়ী। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, পুরস্কার নেওয়ার জন্য তাঁর পরিবারের দু’জন সদস্যকে দিল্লী আসতে হবে। নারায়ণবাবুর ছেলে তাপস দেবনাথ জানালেন, “খেতাব আনতে আমাদের পরিবারের তরফে যাওয়ার কথা ছিল আমার ছোট মেয়ে অ্যালিসিয়া ও দিদির ছেলে স্বর্ণাভর। তারপর কেন্দ্রের তরফে জানানো হয় দিল্লি যাওয়ার দরকার নেই। বাড়িতেই পৌঁছে দেওয়া হবে অভিজ্ঞানপত্র। আর কোনও যোগাযোগ করা হয়নি।”
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছিল হাঁদা-ভোঁদার। বিখ্যাত ওই কার্টুন চরিত্রদের বর্তমান বয়স ৫৯ বছর। আর বাঁটুল চরিত্র ২০২১ সালে ৫৬ বছরে পা রেখেছে। নন্টে-ফন্টেও পা রেখেছে ৫২ বছরে। ২০১৩ সালে সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন নারায়ণ দেবনাথ। ২০২১-এ পান পদ্মশ্রী। শিবপুর বাজারে নিজের বাড়িতে এখন কার্যত ঘরবন্দি খ্যাতনামা এই কার্টুনিস্ট। একা বিছানা থেকে নামতেও পারেন না। তাপসবাবু জানালেন, “কবে পদ্মশ্রী খেতাব হাতে আসবে, আমরা উদগ্রীব হয়ে আছি। কার সঙ্গে যোগাযোগ করব জানি না। পুরোটাই অন্ধকারে।” কিংবদন্তির পরিবারের আর্জি, জীবিত থাকাকালীন ওঁর (নারায়ণ দেবনাথ) হাতে খেতাব পৌঁছে দিক কেন্দ্রীয় সরকার।