একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় প্রচারে এসে নিয়ম করে বারবার সরকারের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন গেরুয়াশিবিরের শীর্ষনেতারা। বিজেপির আমলে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে উন্নয়নের বন্যা বইছে দাবি করেছেন মোদী-শাহ। উত্তরপ্রদেশ মডেলের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। যোগীরাজ্যে অপরাধ, মাফিয়াদের দৌরাত্ম কমেছে বলে বহুবার মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী কিন্তু বাস্তব চিত্র কী বলছে? তথ্য অনুযায়ী, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে তফশিলি জাতির উপর অপরাধের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে টুইটে দাবি করা হয়েছে, বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও মধ্যপ্রদেশে তফশিলি জাতির উপর অপরাধের ঘটনা সবচেয়ে বেশি।
বাংলার ক্ষেত্রে চিত্রটা ঠিক কেমন? দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে গত ৩ বছরে তফশিলিদের উপর অপরাধের ঘটনা সবচেয়ে কম বাংলাতেই। ২০১৮ থেকে ২০২০-র মধ্যে গোটা দেশে তফশিলিদের উপর ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৪৫টি অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। যার মধ্যে উত্তরপ্রদেশে ৩৬ হাজার ৪৬৭টি, বিহারে ২০ হাজার ৯৭৩টি এবং মধ্যপ্রদেশে ১৬ হাজার ৯৫২টি অপরাধ হয়েছে। বাংলার ক্ষেত্রে সেই সংখ্যাটা মাত্র ৩৭৩। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে টুইটে দাবি করা হয়েছে, বিজেপি তফশিলিদের শুধুমাত্র অপদস্ত করতে পারে। একমাত্র তৃণমূলই তাদের সম্মান দিতে পারে। টুইটে বেঙ্গল মডেলের পক্ষেও সওয়াল করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাসকয়েক আগে উপনির্বাচনে তফশিলিদের সিংহভাগ ভোটও হয়তো সেই কারণেই তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে। নদিয়ার শান্তিপুর, কোচবিহারের দিনহাটা, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা আসনের উপনির্বাচনে বড় মার্জিনে জয় পেয়েছে তৃণমূল। যার নেপথ্যে রয়েছে তফশিলি ভোট। দিনহাটায় ৪১ শতাংশ তফশিলি জাতির ভোটার রয়েছেন। তাদের একটা বড় অংশ রাজবংশী সম্প্রদায়ের। শান্তিপুরে ৩৫ শতাংশ তফশিলি জাতির ভোটার রয়েছেন। যার অধিকাংশই মতুয়া সম্প্রদায়ের। গোসাবায় মোট ভোটারের ৬০ শতাংশ তফশিলি জাতির এবং ১০ শতাংশ তফশিলি উপজাতির। এই তিন কেন্দ্রেই তফশিলি ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন।