মাত্র সাড়ে ছ’মাসেই, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে শ্রমদিবস তৈরিতে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে বাংলা। বর্তমান আর্থিক বছরে কেন্দ্র শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল ২২ কোটি। গত ১৮ই অক্টোবর সেই লক্ষমাত্রা ছুঁয়ে ফেলে রাজ্য। এরপর আরও শ্রমদিবস বা লেবার বাজেট বাড়ানোর জন্য রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে দফায় দফায় চিঠি লেখা হয়। শেষে একমাস পরে সেই বাজেট বাড়িয়ে করা হল ২৭ কোটি। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত ৫ কোটি শ্রমদিবস বাড়াল কেন্দ্র। সোমবার পর্যন্ত শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে ২৫ কোটি ১৮ লক্ষ ৭ হাজার। রাজ্যে যেভাবে কাজের গতি চলছে, তাতে আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগেই ২৭ কোটির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে। আবারও বাড়াতে হবে শ্রমদিবস। গত আর্থিক বছরে যা ছিল ৪১ কোটি।
পাশাপাশি, ১০০ দিনের কাজে নতুন অভিমুখ খোলার উপরে জোর দিচ্ছে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর। ইতিমধ্যে নতুন পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায় ১০০ দিনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার-সহ দপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি চিরাচরিত কাজ থেকে বেরিয়ে আসার উপরে জোর দিয়েছেন। আগে ১০০ দিনের কাজ মানে রাস্তা তৈরি, পুকুর খনন, সেচখাল কাটা, সবুজায়নের কাজ হতো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আরও নতুন নতুন কাজ খুঁজছে পঞ্চায়েত দপ্তর, যাতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত করা যায়।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে রাজ্যে ৯৪ লক্ষ ৯ হাজার মানুষ ১০০ দিনের কাজে যুক্ত রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত বর্তমান আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৫৫৩ কোটি ২৪ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা। ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা দৈনিক মাথাপিছু ২০২ টাকা পান। লকডাউনের সময় গ্রামীণ অর্থনীতি সচল থাকার অন্যতম মাধ্যম ছিল ১০০ দিনের কাজ। আমফান, যশ প্রভৃতি বিপর্যয়ের সময়েও এই প্রকল্পে যুক্ত শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়েছিল। গ্রামের মানুষের অন্যতম আয় ছিল ১০০ দিনের কাজ। কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে এই প্রকল্পে জোরকদমে এগিয়ে চলেছে বাংলা। যেখানে অন্য সব রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এবার কাজের গুণগত পরিবর্তনের উপর জোর দিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। কী করে আরও উন্নত মানের কাজ করা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে ওই দপ্তরে। ১০০ দিনের প্রকল্পে বৈচিত্র্য এবং বিভিন্ন দপ্তরের কাজে সমন্বয় আনতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।