বাংলার সমস্ত পুরসভার ভোট কত দফায় করানো সম্ভব, তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। রাজ্যের বকেয়া পুরসভাগুলিতে ভোট করানো নিয়ে কী পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের, তাও লিখিত আকারে জানাতে বলা হয়েছে। বুধবার শুনানি শেষে এই নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, আগামী সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা করবে আদালত। পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, আপাতত কলকাতার ভোটের বিজ্ঞপ্তির উপর কোনও হস্তক্ষেপ করবে না আদালত।
প্রসঙ্গত, বুধবার প্রধান বিচারপতি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চান ন্যূনতম কত দফায় রাজ্যের সব পুরসভার ভোট করাতে পারবে কমিশন। এ জবাবে কমিশনের আইনজীবী বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে আমি এটা বলতে পারব না।” এর পর বিচারপতি বলেন, “আপনারা যদি কত ইভিএম আছে জানিয়েই দিলেন। তা হলে কত দফায় ভোট করা সম্ভব কেন বলছেন না?” তিনি আর বলেন, “দেড় বছরের বেশি সময় ধরে ভোট হয়নি। কোভিডের জন্য ভোট করা যায়নি বলছেন। তা হলে প্রথম দফায় কলকাতার যখন ঘোষণা করলেন, বাকিগুলো ঘোষণা করলেন না কেন? নির্বাচনের পরিচালক হিসাবে আপনাদের তো একটা দায়বদ্ধতা আছে।” তার জবাবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারাল বলেছেন, “কলকাতা প্রথম করা হয়েছে কারণ এখানে টিকাকরণের হার সবচেয়ে বেশি। রাজ্যের মধ্যে এখানে সবচেয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভাল। তাই ভোট আগে করা হচ্ছে।” একটি পুরসভার ভোটের সঙ্গে অন্য পুরসভার ভোটের সম্পর্ক নেই বলেও আদালতে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ডিসেম্বরে কলকাতা এবং হাওড়া পুরনিগমের ভোট করার পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এর পরই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য বিজেপি। তাদের মামলার বিষয় ছিল, কেন রাজ্যের সব ক’টি পুরসভায় বকেয়া ভোট এক সঙ্গে করানো হচ্ছে না? প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে হচ্ছে এই মামলার শুনানি। কেন এক সঙ্গে ভোট করা হচ্ছে না, বিচারপতিরা তা জানতে চেয়েছিলেন কমিশনের কাছে। এ নিয়ে আদালতে হলফনামাও জমা দেয় কমিশন।
মামলাটির কোনোকরম নিষ্পত্তি না হলেও নির্বাচনের দিন ঘোষণায় কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি আদালত। রাজ্য নির্বাচন কমিশনও ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরভোটের নির্ঘণ্ট। যদিও হাওড়া পুরনিগমের ভোটের ঘোষণা করেনি কমিশন। হাওড়া পুরনিগমের বিন্যাস সংক্রান্ত একটি বিলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় সই না করাতেই এখনও ঝুলে রয়েছে বিষয়টি। তবে কলকাতা পুরভোটের জন্য ইতিমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস। বুধবারই পুরভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। আগামী ১৯শে ডিসেম্বর পুরনির্বাচন হবে কলকাতায়।