কৃষক আন্দোলনের সামনে মোদী সরকার নতিস্বীকার করতেই ফের হাওয়া লেগেছে সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের পালে। এই পরিস্থিতিতে এবার কেন্দ্র জানিয়ে দিল, এখনই দেশজুড়ে এনআরসি চালুর কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের প্রশ্নের উত্তরে এই কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সংসদে মোদী সরকারের এহেন মন্তব্যের জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সমালোচকদের একাংশের খোঁচা, ২০১৯ সালে এটা নেহাতই গিমিক ছিল। আইন চালুর কোনও রকম প্রস্তুতিই নেয়নি কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে সংসদে পাশ হওয়ার পর আইনে পরিণত হয় এনআরসি বিল। তারপর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীই কেন এই আইনের আওতায় আসবেন না? কেন এই আইন থেকে বাদ দেওয়া হল শুধু মুসলমানদের? এমনই সব প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। যার ফলে উত্তাল হয় আসমুদ্রহিমাচল। তবে কোনও আন্দোলনেই অবশ্য কখনও গুরুত্ব দেয়নি মোদূ সরকার। যদিও কবে থেকে এনআরসি কার্যকর হবে, এই প্রশ্নে বারবারই হোঁচট খেয়েছে তারা।
তাই কবে থেকে দেশজুড়ে এনআরসি কার্যকর হবে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে সেই সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা চান তৃণমূল সাংসদ। জবাবে অমিত শাহের মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান, ‘জাতীয় স্তরে এনআরসি কার্যকর করার কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের।’ সরকারের এই জবাবের পর থেকে আলোড়ন শুরু হয় দেশজুড়ে। কারও বক্তব্য, কৃষক আইনের মত এনআরসি, সিএএ, এনপিআর- সবই যে ভুল সিদ্ধান্ত, তা বুঝতে পারছে কেন্দ্র। তবে সবকিছুই প্রত্যাহার করলে মুখ পুড়বে, তাই কেন্দ্র না পারছে গিলতে না পারছে উগরোতে।
মালা রায়ের বক্তব্য অবশ্য অন্য। তাঁর মতে, ২০১৯ নির্বাচনের আগে এনআরসি ছিল মোদী-শাহের গিমিক। পুর নির্বাচনের প্রচারের মাঝে ফোনে বললেন, ‘কেন্দ্র যে এনআরসি নিয়ে তৈরি নয়, তার প্রমাণ বারবার মিলেছে। ওদের কাছে কোনওরকমের তথ্য-পরিসংখ্যান কিছুই নেই। লোকসভা নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ তৈরি করা ও তার ফায়দা নিতেই বারবার এনআরসি, সিএএ, এনপিআর এসব বুলি আওড়ে ছিল। এখন ওদের আসল অবস্থান সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।’