কৃষক আন্দোলনের সামনে নতিস্বীকার করে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। তবে এতেও স্বস্তি পাচ্ছে না মোদী সরকার। কারণ, এমএসপি আইন নিয়ে অবস্থানে এখনও অনড় কৃষকরা। আগামী ৪ঠা ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার কোনও সিদ্ধান্ত না জানালে আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। এমতাবস্থায় মঙ্গলবার মধ্যপন্থা হিসেবে এমএসপি আইন সংক্রান্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়ে কৃষক সংগঠনের কাছে প্রতিনিধিদের নাম পাঠানোর অনুরোধ করেছে সরকার। সংযুক্ত কৃষক মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের ওই অনুরোধ নিয়ে আলোচনা হবে ৪ঠা ডিসেম্বর।
পাশাপাশি, আজও একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সংসদের বাইরে যেখানে কৃষকদের শান্ত করার প্রয়াস করছে সরকার, সেখানে সংসদের অন্দরেও বিরোধীরা একই দাবিতে অনড়। আর এই দুই টানাপোড়েনেই নতুন সঙ্কট হাজির কৃষক আন্দোলনের সাফল্যে উজ্জীবিত অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার সংগঠনও এবার পথে নামায়। ব্যাঙ্ক অফিসাররা আন্দোলনে নেমেছেন বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দিল্লীর যন্তরমন্তরে দিনভর অবস্থানে অংশ নেয় আন্দোলনকারী কর্মীরা। তাঁদের দাবি, ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের মাধ্যমে শুধু যে সরকারি সংস্থাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে তাই নয়, সংরক্ষণের উপরও কোপ পড়তে চলেছে। সরকারি সংস্থা অথবা ব্যাঙ্ক যখনই বেসরকারি হাতে যাবে, তখন সর্বাগ্রে সংরক্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই কারণেই এই উদ্যোগের বিরোধিতা করা বেশি করে প্রয়োজন। এই ইস্যু শুধুই ব্যাঙ্ককর্মীদের মধ্যেই সেই কারণে আর সীমাবদ্ধ নেই। এবার রাজনৈতিকভাবেও এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হতে চলেছে রাজনীতি। বিশেষ করে সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল এখন থেকেই জানিয়ে দিয়েছে, বেসরকারিকরণের ফলে কোপ পড়তে চলেছে সরকারি চাকরির সংরক্ষণে।
প্রসঙ্গত, এই প্রচার বেশি করে জোরদার হচ্ছে উত্তরপ্রদেশ ভোটের পূর্বলগ্নে। সংরক্ষণ ইস্যুতে উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিজেপিকে চেপে ধরার কৌশল নেওয়া হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই জাতপাতের ভিত্তিতে সেন্সাস করা হোক, এই দাবি তুলেছে দলগুলি। তবে মঙ্গলবারও সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত প্রশ্নের উত্তরে সংসদে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, তফসিলি জাতি ও উপজাতির পৃথক পরিসংখ্যান যেমন থাকে, তেমনই থাকবে। পৃথকভাবে জাতিগত কোনও সেন্সাস করা হবে না। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বিক্ষোভ জোরালো করবে কিছু রাজনৈতিক দল। মোদী সরকারের কাছে মাথাব্যথার ব্যাপার এই যে, এই তালিকায় থাকছে জোটশরিক নীতীশ কুমারের দলও। সুতরাং, এমএসপি আইন ও ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ বিল বিপাকে ফেলেছে মোদী সরকারকে।