চলতি খরিফ মরশুমে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছে ধান বিক্রির জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন প্রায় ২৩ লক্ষ কৃষক। গত ২০-২১ খরিফ মরশুমে নথিভুক্ত কৃষকের সংখ্যা ছিল ২২ লক্ষ ৬৮ হাজার। নতুন খরিফ মরশুম ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেলেও সরকারি ধান কেনার কাজ শুরু হবে আসন্ন ডিসেম্বর মাস থেকেই। নভেম্বর মাসে কৃষকদের নাম নথিভুক্তকরণের উপর জোর দিয়েছিল রাজ্য সরকার। নতুন ধান এখন বেশি পরিমাণে উঠতে শুরু করেছে। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, নতুন ধান কেনার উপর বেশি জোর দেবে দপ্তর। খাদ্যদপ্তরের বক্তব্য, নতুন ধানের গুণগত মান ভালো হয়। খরিফ মরশুমের শুরুতে পুরনো ধান সরকারের কাছে বিক্রি করার ঝোঁক থাকে। কারণ প্রতি খরিফ মরশুমে সরকারের ঘোষিত সংগ্রহ মূল্য বৃদ্ধি পায়। গত খরিফ মরশুমে প্রতি কুইন্টাল সাধারণ ধানের সরকারি দাম ছিল ১৮৬৫ টাকা। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১৯৪০ টাকা। স্থায়ী ক্রয়কেন্দ্রে (সিপিসি) বিক্রি করলে কুইন্টাল পিছু আরও ২০ টাকা করে বোনাস দেওয়া হয়। এবার ৩৫৪টি সিপিসি খোলা হয়েছে। ৮০০ টনের কিছু বেশি পরিমাণ ধান এখনও পর্যন্ত কেনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খোলা বাজারের তুলনায় দাম বেশি পাওয়ার কারণে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করার আগ্রহ স্বাভাবিকভাবে কৃষকদের বেশি থাকে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ফড়েদের বাদ দিয়ে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে যাতে ধান কেনা হয়, তার উপর বিশেষ জোর দিয়েছে রাজ্য খাদ্যদপ্তর। স্বচ্ছতা বজায় রেখে ধান কেনার জন্য নথিভুক্ত কৃষকদের আধার নম্বর নেওয়া হয়েছে এবার। আধার যাচাই করে ধান কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খাদ্য দপ্তরের একজন করে পদস্থ আধিকারিককে একটি করে জেলার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই আধিকারিকদের নিয়মিত জেলায় গিয়ে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার উপর জোর দেয় সরকার। এই কারণে একজন কৃষকের কাছ থেকে খরিফ মরশুমে ধান কেনার সর্বোচ্চ পরিমাণ ৪৫ কুইন্টালে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কৃষি সমবায় সংস্থাগুলি অস্থায়ী শিবির খুলে সরকারের হয়ে ধান কেনে। সমবায় সংস্থাগুলির ধান কেনার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ তুলনামূলকভাবে বেশি ওঠে। বেনামে ফড়েরা যাতে ধান বিক্রি না করে, তার জন্য বিশেষ নজরদারি রাখছে দপ্তর। সরকারি ধান কেনার প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে অতীতে অনিয়মে অভিযুক্ত বেশ কিছু সমবায় সংস্থাকে।
