কথায় আছে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। মাছ ছাড়া যেন নেহাতই ফিকে বঙ্গসমাজের খাদ্যাভ্যাস। শুধু বাংলাই নয়, ভারতের একটা বড় অংশের দৈনন্দিন পাতে মাছ খুবই গুরত্বপূর্ণ খাবার। কিন্তু সেই মাছ এবার থেকে উঠবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। বিশেষত ইলিশ, পমফ্রেটের মতো সামুদ্রিক মাছ আর ভোজনরসিক বাঙালির পাতে পড়বে কি না, তা নিয়ে এখন থেকেই দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে। কারণ? কেন্দ্রের মৎস্যমন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালা। তাঁর নিদান, মাছ বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ হল দেবী লক্ষ্মীর বোন। সমস্যাটা সেখানেই। দেবী লক্ষ্মীর বোনকে ধরতে এবার অনুমতি দেবে কি কেন্দ্রীয় সরকার? সম্প্রতি গুজরাতে মৎস্যজীবীদের এক সভায় অংশ নিয়েছিলেন রূপালা। সেখানে তাঁদের সমস্যা-সংকটের মোকাবিলা করার কথা বলতে গিয়ে হঠাৎই পুরাণ-কথা তুলে আনেন তিনি।
মন্ত্রী বলেছেন, “মাছের ক্ষেত্র নিয়ে চর্চা খুব কমই হয়। বেশিরভাগ মানুষের এ নিয়ে খুব একটা উৎসাহও দেখি না। কিন্তু আপনাদের অন্তত একটা বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। সেট হল দেবী লক্ষ্মীর পৈত্রিক বাড়ি সমুদ্র। বিশাল জলরাশি থেকে তাঁর আবির্ভাব। তিনি সমুদ্রের কন্যা। আপনারাও সামুদ্রিক মাছকে লক্ষ্মীর বোন হিসেবে বিবেচনা করুন। তা হলেই সব সমস্যা মিটে যাবে। কারণ, লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে হলে তাঁর বোনকেও ভালোবাসতে হবে। তা না হলে তিনি রাগ করবেন।” স্বাভাবিকভাবেই এই মন্তব্যের কটাক্ষ করতে ছাড়েননি নেটিজেনরা। অনেকেই গোরুর দুধে সোনা খোঁজার তত্ত্বকে সামনে এনে তাঁর মন্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন। মৎস্যজীবীরাও আড়ালে হাসিঠাট্টা করেছেন। সমালোচনাও করেছেন কেউ কেউ। রূপালা অবশ্য এসব গায়ে মাখেননি। মাছের উপর আধ্যাত্মিক তকমা লাগাতে দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাব-বিষয়ক পৌরাণিক কাহিনী সাবলীলভাবেই শুনিয়ে গিয়েছেন তিনি। আর তাতেই উঠেছে হাসির রোল।
