কৃষক আন্দোলনের জেরে শেষমেশ পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে মোদী সরকার। গত শুক্রবারই বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার পরেও কেন্দ্রের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের অন্নদাতারা। এবার আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে গাজিপুর সীমানা থেকে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইতের বার্তা, ‘আগামী ১০-১৫ দিন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোদীভক্তরা আমাদের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালাবে। সেসবে কান দিলে চলবে না। ঠান্ডা মাথায়, কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে চুপচাপ চালিয়ে যেতে হবে আন্দোলন।’
প্রসঙ্গত, গুরু নানকের জন্মজয়ন্তী পালন, খেত থেকে ফসল তোলা, আরও বড় আন্দোলনে নামার আগে কিছুটা অক্সিজেন নিয়ে নেওয়া। মূলত এই তিন কারণেই নিজেদের গ্রামে ফিরেছিলেন একটি বড় অংশের আন্দোলনকারী। কিন্তু আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গাজিপুর, সিংঘু, টিকরি সীমানায় ফের জনসুনামি দেখা যায়। শুধু কৃষকরাই নন, ছিলেন প্রচুর সংবাদকর্মীও। এমনকী কৃষকদের সঙ্গে যোগ দিতে দেখা যায় বহু সাধারণ মানুষকেও। ঠিক সাতদিন আগে গুরু নানক জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তিন কৃষি আইন ফেরত নেওয়া হবে। তবু আন্দোলন না তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃষকরা। এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে টিকাইত বলেন, ‘উনি বড় রাজনীতিবিদ। বুদ্ধি করে এই চাল দিয়েছেন।’
তাঁর কথায়, ‘আমাদের অনেকগুলো দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল কালা কানুন প্রত্যাহার করা। একমাত্র দাবি কিন্তু নয়। তাও এখনও প্রত্যাহার হয়নি, ঘোষণাটাই হয়েছে শুধু। এইটুকু করে ভাবছে আমাদের তুলে দেবে। তা হচ্ছে না। আমরা জানি, ঠিক যেদিন সংসদে এই আইন প্রত্যাহার হবে, তারপর থেকেই ওঁর ভক্তরা নখ-দাঁত বার করে বলবে, এই তো দেখো, আমাদের মহান প্রধানমন্ত্রী ওদের কথা মেনে নিল, তাও ওরা রাস্তা আটকে বসে আছে। অনেক অপপ্রচার চলবে আমাদের বিরুদ্ধে। আগামী ১০-১৫ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিরুদ্ধে জোরালো প্রচার চালানো হবে। তবে আমরা তৈরি। সবাইকে বলে রেখেছি, কিছুতেই মাথা গরম করা যাবে না। কোনও প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না। যেভাবে আন্দোলন চলছে, সেভাবেই শান্তিপূর্ণভাবে চালিয়ে যেতে হবে।’