কর্মসংস্থান বাড়াতেই কর্মতীর্থ প্রকল্প চালু করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। সরকারি উদ্যোগে রীতিমতো ‘মার্কেটিং হাব’ তৈরির পরিকল্পনাই ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে বেশিরভাগ কর্মতীর্থ স্টলই ফাঁকা পড়ে রয়েছে।
কোথাও কর্মতীর্থ ভবন তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ, আবার কোথাও কর্মতীর্থের দোকান চালুই হয়নি। এই প্রকল্পের সুবিধা কতটা, কীভাবে ব্যবসা করা যাবে, সাধারণ মানুষ কতটা উপকৃত হবেন সে সম্পর্কে বিশদে ধারণা নেই অনেকেরই। তাই কর্মতীর্থ নিয়ে সাধারণ মানুষকে স্বচ্ছ ধারণা দিতেই এবার উদ্যোগী হল নবান্ন।
রাজ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৪ সালের জুলাইয়ে প্রতি ব্লকে অন্তত একটি করে ‘কর্মতীর্থ’ নামে ‘মার্কেট কমপ্লেকস’ তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। বলা হয়েছিল, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, গ্রামীণ কারিগর এবং ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য সেখানে বিক্রি করতে পারবেন।
সরকারি উদ্যোগে তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। মূলত তিনটি দফতরকে যেমন, সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তিকে পৃথক ভাবে প্রকল্পটি রূপায়ণ করার কথা বলা হয়েছিল।
দূরপাল্লার বাসগুলি যেখানে থামে সেখানে কর্মতীর্থের অনেক স্টল করা হয়েছে। কিন্তু তেমন ভিড় হয় না। এক্ষেত্রে দূরপাল্লার বাসগুলি এখানে স্টপেজ দিলে সাধারণ মানুষ আরও বেশি করে সেখানে যাবেন। তাতে অর্থনৈতিক লেনদেন আরও বাড়বে। মানুষও উপকৃত হবেন। দোকানগুলিও অবহেলায় পড়ে থাকবে না।
রাজ্যে এই মুহূর্তে রাস্তার পাশে কর্মতীর্থ রয়েছে ৫৩৪টি। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের বেশ কিছু স্টল থাকে। যেখানে ওই দফতরের তৈরি নানা জিনিস বিক্রি হয়। শুধু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের নয় অন্য বেশ করেকটি দফতরেরও এখানে স্টল থাকে।
সাধারণ মানুষ এই স্টলগুলি থেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে কর্মতীর্থের স্টলগুলি ফাঁকাই পড়ে থাকে। উল্লেখ্য, গত ২৫ অগস্ট তফশিলি জাতি নিয়ে এক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কর্মতীর্থ প্রায় ১১ হাজার দোকান ফাকা পড়ে আছে। আমরা দিতে চাইছি কিন্তু নেওয়ার লোক নেই।
তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সরকারি এক আধিকারিকই বলেছিলেন, কর্মতীর্থ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ তেমন অবগত নয়। কর্মতীর্থের স্টলে কী পাওয়া যায় তা জানেনই না অনেকে। সেটাই বোঝাতে হবে জনসাধারণকে। তার জন্য জেলায় জেলায় ঘুরে ওয়ার্কশপ করা হবে। কীভাবে কর্মতীর্থে ব্যবসা বাড়ানো যায় সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।