শুক্রবার, ২৬শে নভেম্বর, ভারতীয় ‘সংবিধান দিবস’। শুভেচ্ছা জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯ সালে, ভারতের গণপরিষদে ভারতের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫০ সাল থেকে কার্যকর করা শুরু হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের সোশ্যাল জাস্টিস ও এমপাওয়ারমেন্ট মন্ত্রক ১৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, ২৬ নভেম্বর দিনটিকে সংবিধান দিবস হিসাবে পালন করার জন্য। ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে সংবিধানের মূল্যবোধ ও গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৪৬ সালের ক্যাবিনেট মিশন প্ল্যানের অধীনে গঠিত একটি গণপরিষদ দ্বারা ভারতের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল। ১৯৪৬-এর ৯ই ডিসেম্বর, বৈঠক হয় এবং অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসাবে বিধানসভার সবচেয়ে বয়স্ক সদস্য ড. সচ্চিদানন্দ সিনহাকে নির্বাচিত করা হয়। সে বছরের ১১ই ডিসেম্বর সালে ড. রাজেন্দ্র প্রসাদকে এই কমিটির স্থায়ী চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।।সংবিধান প্রণয়নের জন্য গণপরিষদ ১৩টি কমিটি গঠন করে যার মধ্যে ড. বি. আর. আম্বেদকরের নেতৃত্বে একটি ড্রাফটিং কমিটিও নির্মিত হয়। কমিটির নির্বাচিত প্রণয়ন অনুসারে সংবিধানের চূড়ান্ত খসড়া নির্মাণ করে সাত সদস্যের ড্রাফটিং কমিটি।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনা সহ ৩৯৫টি ধারা, ২২টি বিভাগ এবং ৮টি শিডিউল ছিল। ভারতীয় সংবিধান হল বিশ্বের দীর্ঘতম লিখিত সংবিধান। ১০৪ বার সংশোধনী আনা হয়েছে ভারতীয় সংবিধানে। বর্তমানে সংবিধানের ৪৭০টি আর্টিকেল, ২৫টি বিভাগ এবং ১২টি শিডিউল রয়েছে। ভারতীয় সংবিধান টাইপ বা প্রিন্টেড আকারে রচিত হয়নি। সংবিধান সম্পূর্ণ হাতে লিখে এবং ক্যালিগ্রাফি মাধ্যমে তৈরি হয় হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায়। আচার্য নন্দদুলাল বসুর নেতৃত্বে শান্তিনিকেতনের শিল্পীরা ক্রফটিংয়ের কাজ করেন। ক্যালিগ্রাফির কাজ করেন দিল্লীর প্রেমবিহারী নারায়ণ রইজাদা। ভারতের সংবিধানের মূল কপিগুলি ভারতের সংসদের লাইব্রেরিতে বিশেষ হিলিয়াম সম্বলিত কেসে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। সংবিধানের প্রতিটি অংশ ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসের একটি পর্ব বা দৃশ্যের বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়। প্রতিটি অংশের শুরুতেই নন্দলাল বসু ভারতের স্বাধীনতার ঘটনাক্রম এবং ইতিহাস থেকে একটি পর্ব বা দৃশ্য চিত্রিত করেছেন। ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসের বিভিন্ন সময় সিন্ধু উপত্যকার মহেঞ্জোদারো থেকে শুরু করে, বৈদিক যুগ, গুপ্ত ও মৌর্য সাম্রাজ্য এবং মুঘল যুগ থেকে জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস সংবিধানে বর্ণিত হয়েছে।