কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে বেড়েছে অনলাইনে কাজকর্মের পরিমাণ। এমনকী, চিকিৎসাও হয়েছে অনলাইনের মাধ্যমেই। ভার্চুয়াল মাধ্যমেই একাধিক চিকিৎসক রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়েছেন। আর সেই পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে টেলি মেডিসিন। সশরীরে চিকিৎসকের সামনে উপস্থিত না থেকে অনলাইনে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে ওষুধ খেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন অনেকেই। আর এবার সেই টেলি মেডিসিন পদ্ধতিকেই নতুন কায়দায় নিয়ে এসেছে রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর। এই সংক্রান্ত একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করা হয়েছে। তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’।
উল্লেখ্য, প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষকে সুচিকিৎসা দিতে নতুন প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। এই পোর্টালের মাধ্যমে হাসপাতালে না গিয়ে গ্রামে বসেই অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারবেন সাধারণ মানুষ। চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তাঁর থেকে নিতে পারবেন ওষুধ। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ইতিমধ্যেই এই সুবিধা পেয়েছেন বহু মানুষ।
প্রসঙ্গত, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গ্রামের দিক থেকে মানুষ চিকিৎসার জন্য ভিড় করেন শহরের হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলিতে। এর ফলে হাসপাতালরগুলির মধ্যে একদিকে যেমন চাপ বাড়ে, অন্যদিকে চিকিৎসার জন্য গ্রাম থেকে শহরে এসে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়তে হয় রোগীদের। এই পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ কমাতে ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গ্রামের মানুষের নাগালে আনতে এই প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পের গোটা বিষয়ই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে স্বাস্থ্যভবনের সেন্ট্রাল সার্ভার থেকে।
প্রথমে গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা সাব সেন্টারে যেতে হবে রোগীকে। এরপর ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স স্বাস্থ্য ইঙ্গিতের পোর্টাল চালু করে সেখানে রোগীর সমস্যার কথা আপলোড করবেন। আপলোড করার পরই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর যোগাযোগ করিয়ে দেওযা হবে। তার মাধ্যমেই রোগীর সঙ্গে ওই চিকিৎসক কথা বলবেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, পিজি, এনআরএস ও মালদহ মেডিক্যালের যে চিকিৎসক সে সময় অনলাইন থাকবেন সেই চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর কথা বলিয়ে দেওয়া হবে। এরপর রোগীর সমস্যার কথা শুনে চিকিৎসার সংক্রান্ত পরামর্শ দেবেন। অনলাইনে প্রেসক্রিপশনও দেবেন ওই চিকিৎসক।
স্বাভাবিকভাবে এর ফলে লাভ হবে উভয়পক্ষেরই। এভাবে হাসপাতালগুলিতে ভিড় যেমন কমবে, তেমনই বিনামূল্যের চিকিৎসার জন্য গাড়ি ভাড়া করে শহরে আসার প্রয়োজন হবে না গ্রামবাসীদের। দীর্ঘক্ষণ লাইনেও দাঁড়াতে হবে না তাঁদের। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ মাসে লক্ষাধিক মানুষ এই প্রকল্পে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পেয়েছেন। সূত্র অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যালের চিকিৎসকদের সপ্তাহে ২ দিন করে এই পরিষেবা দেওয়ার কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে।