বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার একাধিক পুরসভা, পুর পরিষদ ও নগর পঞ্চায়েতের ভোট সম্পন্ন হল। তবে আগরতলা পুরসভার উপর নজর ছিল গোটা ত্রিপুরা জুড়ে ২৮শে নভেম্বর ভোটের ফলাফল ঘোষণা। তৃণমূলের আসল লক্ষ্য ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন হলেও তার আগে ত্রিপুরার পুরনির্বাচনকেই আপাতত পাখির চোখ করেছিল তৃণমূল। যদিও ভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। বিজেপির বিরুদ্ধে উঠেছে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের অভিযোগ। পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল ও বামেরা।
প্রসঙ্গত, দু’মাস ধরে টানা জনসংযোগ যাত্রার সূচনা করেছিল তৃণমূল। এই ভোটে তৃণমূলের প্রচারের জন্য ত্রিপুরায় পৌঁছে গিয়েছিল ‘দিদির দূত’ গাড়ি। সেই গাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি সাংসদ সুস্মিতা দেবের উপরেও হামলার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও তা অস্বীকার করেছিল গেরুয়াশিবির। এর পরেই ত্রিপুরার পুরসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল অনেকটাই। ‘দিদির দূত’ গাড়ি করেই বাংলার জনমুখী কর্মসূচীগুলিকে ত্রিপুরার মানুষের কাছে তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছিল তৃণমূল। সেই সূত্রেই একাধিকবার আগরতলায় মিছিলও করে তারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব, কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসু, অর্পিতা ঘোষ সহ দলে আসা দীর্ঘদিনের বিধায়ক সুবল ভৌমিকরা। যদিও সুস্মিতা দেব ও ‘দিদির দূত’-এর গাড়ির উপর হামলা চলে। এর পরই গর্জে উঠে ট্যুইটারে বিপ্লব দেবকে নিশানা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু নিশানা নয়, অভিষেক বন্দোপাধ্যায় একটি সভা করেন। তবে তার প্রচার বা কর্মসূচী যথাযথ ভাবে করতে দেওয়া হয়নি বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এরপর একাধিক জায়গায় প্রার্থীরা আক্রান্ত হন। প্রায় ২৭ জন প্রার্থী আক্রান্ত হয়েছেন। এফআইআর হয়েছিল ৩০টির কাছাকাছি। অশান্তির অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। উচ্চ আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরেও তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছিল তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব জানিয়েছেন, ”রাজ্য সরকার একনায়কতন্ত্র চালিয়েছে গোটা ত্রিপুরা জুড়ে৷ মানুষ আমাদের কাছে আসার আগে, আমরা মানুষের কাছে চলে গিয়েছি৷ এটাই আমাদের জনসংযোগ।” অন্যদিকে, স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক জানিয়েছেন, “মানুষ অত্যাচারিত হয়েছেন ত্রিপুরায়, আমাদের কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন তবে এটা দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারে না।”
এপ্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “আসল বিপ্লব ত্রিপুরায় এবার শুরু হবে। বিপ্লব দেব ও তাঁর সরকার আমাদের ভয় পেয়েছে।” যে জনসংযোগ কর্মসূচী শুরু করেছিল তৃণমূল, তার মূল স্লোগান ছিল ‘ত্রিপুরার জন্য তৃণমূল’। বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগের কাজ সম্পন্ন করেছিল তারা। সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, “ত্রিপুরার জন্য তৃণমূল, এই স্লোগান নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিশনকে মানুষের সামনে তুলে ধরেছি আমরা। তার জন্য রাজ্যের ৫৮ ব্লক এবং ১৬টি পুর এলাকায় আমরা জনসংযোগ যাত্রা করেছি। বাংলার মতো কেন এ রাজ্যেও তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার প্রয়োজন, তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে মানুষের কাছে।