চলতি বছরের শেষেই খুলে দেওয়া হতে পারে সবুজদ্বীপ। উদ্বোধনের প্রহর গুনছে হুগলীর এই বিশ্বমানের পর্যটন প্রকল্প। এখন অপেক্ষা কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবুজ সংকেতের। সোমবার এই ইঙ্গিত দিয়েছে হুগলী জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের ওই প্রকল্পের কাজের পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের কর্তারা। তারপরেই প্রকল্পে শেষ মূহূর্তের তুলির টান দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। পরিষদ কর্তারা জানিয়েছেন, ১৫ই ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করতেই হবে। বিষয়টি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিষদ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, চারটি কটেজ, মূল পর্যটন পার্কে ঢোকার রাস্তা, বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য পরিষেবার কাজ ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নবান্নের নির্দেশ মিললেই বুকিংয়ের কাজও শুরু হয়ে যাবে।
এদিন হুগলী জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান, নির্বাহী আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক শান্তনু বালা ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় সবুজদ্বীপ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁরা প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। পরে সুবীরবাবু বলেন, “১৫ই ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করতে হবে। এমনটাই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে আমরা জানিয়েছি। এর আগেও সবুজদ্বীপ দিয়ে একাধিক চূড়ান্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার কাজ শেষ হবেই। আমাদের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সবুজ সংকেত দিলে ডিসেম্বরেই প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে। বিশ্বমানের এই পর্যটন প্রকল্পের সুবিধা এবছরের শেষেই পর্যটনপ্রেমীরা পাবেন।”
বিগত ২০১৮ সালে হুগলীর বলাগড়ের সবুজদ্বীপকে কেন্দ্র করে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের ওই প্রকল্পে নজরদারি করার দায়িত্ব পায় হুগলী জেলা পরিষদ। প্রায় সাড়ে ১০ কোটির ওই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য সমস্ত মহলে তৎপরতা শুরু হয়। তিন বছরের মধ্যে সেই প্রকল্পের প্রথম পর্বের কাজ প্রায় শেষের মুখে। বলাগড়ের ওই প্রকল্পে মোট সাতটি বিশ্বমানের সুবিধাযুক্ত কটেজ তৈরি করা হবে। ২টি বিশেষ ধরণের কটেজ ও ১টি ডর্মেটরি থাকবে। ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, আধুনিক জিম, নদীতে জলবিহার, বনবিতান, ক্যাফেটরিয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মুক্তমঞ্চ, ফাস্টফুডের স্টল সহ একাধিক সুবিধা ওই প্রকল্পের আওতায় থাকছে। প্রকল্প এলাকার মধ্যে ঘোরাফেরার জন্য আধুনিক ব্যবস্থা থাকবে। তবে প্রথম পর্বে চারটি কটেজ, প্রকল্পের মুখ্য তোরণ, যাতায়তের জন্য কটেজ পর্যন্ত সড়ক, বিদ্যুৎ, পানীয় জল সহ প্রয়োজনীয় পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। জেলা পরিষদের লক্ষ্য, ২৫শে ডিসেম্বর থেকে বর্ষশেষের আনন্দ উদযাপন ও ২০২২ সালের বর্ষবরণের জন্য বুকিং চালু করা। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিদিন কাজের নজরদারি করা হবে, যাতে ১৫ই ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ করা যায়।