রাজ্যের গ্রাম্য এলাকাগুলিতে ক্রমশ অবৈধ মজুতদারির কারণে বাজারে কাঁচাপাটের কৃত্রিম সংকটের সমস্যা এখনও অব্যাহত। এবার তা দূর করতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাদের দাবি, বস্ত্রমন্ত্রকের অধীনস্থ জুট কমিশনারের তরফে জারি করা পাটের সর্বোচ্চ দামের সীমা সংক্রান্ত আদেশ প্রত্যাহার করা হোক। এহেন সমাধান সূত্রের সঙ্গে সহমত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই দেরি না করে তিনি এব্যাপারে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লিখেছেন। ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প রক্ষার কথা ভেবে গত ১৮ তারিখে এই চিঠি লেখেন মমতা। তবে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে বস্ত্রমন্ত্রকের কাছে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো চিঠির সূত্র টেনেই সোমবার রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে আয়োজিত এক বৈঠকে বস্ত্রমন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিক তথা জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তীকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বলা হয়। শ্রমমন্ত্রী ছাড়াও শ্রমসচিব বরুণ রায়, শ্রম কমিশনার জাভেদ আহমেদ রাজ্যের তরফে এই আর্জি জানান। পাশাপাশি চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ’র চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্তও একই অনুরোধ করেন। যদিও মলয়বাবু এবিষয়ে কোনও ইঙ্গিতই দেননি বৈঠকে। তিনি এদিন রাতেই দিল্লী গিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বস্ত্রমন্ত্রকের বড় কর্তাদের সঙ্গে তাঁর এনিয়ে আলোচনা হতে পারে। তার আগে তিনি সর্বোচ্চ দাম সংক্রান্ত নির্দেশ প্রত্যাহার করার কোনও ইঙ্গিত দিতে রাজি হননি বলেই অনুমান।
তবে এদিনের বৈঠকে বস্ত্রমন্ত্রকের অপর কর্তা তথা জুট কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজয়কুমার জলিকে কাঁচাপাট কেনার জন্য রাজ্যের তরফে বলা হয়। অভাবি বিক্রি রোখার পাশাপাশি ব্যবসায়িক কারণেও জেসিআই-এর পাট কেনার ক্ষমতা রয়েছে। তবে সর্বোচ্চ দাম কুইন্টাল প্রতি ৬৫০০ টাকায় জেসিআইকে পাট কিনতে বাজারে নামতে হলে বস্ত্রমন্ত্রকের তরফে অনুমতি এবং বাজেট দুই দরকার। তাই জলিসাহেবও এনিয়ে কোনও ইতিবাচক সাড়া দিতে পারেননি এদিন। এদিনের আলোচনায় অবশ্য গ্রামস্তরে অবৈধ মজুতদারির বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের পুলিশের অভিযান আরও তীব্র করার পক্ষে সকলেই একমত হন। এ পর্যন্ত কয়েক হাজার কুইন্টাল পাট বাজেয়াপ্ত করেছে তারা। কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছে এব্যাপারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অভিযানের মাত্রা আশানুরূপ হয়নি বলেই ধারণা আধিকারিকদের।