দলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষের গ্রেফতারির পর গতকাল রাতেই আগরতলা যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে রাতে বিমান অবতরণের অনুমতি না মেলায় পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনে আজ আগরতলা পৌঁছান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর সেখানে পা রেখেই বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য প্রশাসনকে তুলোধনা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে এরাজ্য চলছে তাতে সাধারণ মানুষের বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে গিয়েছে। যে বাতাবরণ ত্রিপুরায় তৈরি করা হয়েছে তা দেশের মানুষ দেখেনি। শাসকদল দমন পীড়নের ঘটনায় রোজই নিজেদের রেকর্ড ভাঙছেন। বহুদিন রাজনৈতিক ময়দানে রয়েছি, লড়াই করেছি এমন অবস্থা দেখিনি। এখানে বের হতে দেওয়া হয় না। মিটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয় না। এ রাজ্যে সংবাদমাধ্যম আক্রান্ত, চিকিৎসক আক্রান্ত, যেখানে দুয়ারে গুণ্ডা মডেল ঢুকে যাচ্ছে, থানায় পুলিশ আক্রান্ত। যারা আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে তাদের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?’
গতকাল আগরতলা ইস্ট থানায় তৃণমূল কর্মীদের ওপরে হামলা চালায় বিজেপি কর্মীরা। এ নিয়ে অভিষেক বলেন, ‘পুলিশের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর ইন্ধনে গুণ্ডারা মাথায় হেলমেট পরে, হাতে লাঠি নিয়ে আমাদের কর্মীদের নির্মম ভাবে মারধর করেছে। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হতে গিয়েছে। সেখানেও ২৫ জনের দল নিয়ে গিয়েছে। কারও কোমরে স্টিচ, কারও মাথায় স্টিচ নিয়ে হাসপাতাল থেকে এসেছে। সংবাদমাধ্যেমের কর্মীদেরও মারধর করা হয়েছে। সকালে ২ জন। আর বিকেলে আরও একজন। থানার ভেতরে আক্রমণ করা হয়েছে। আর পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে দেখেছে।’
এরপরই বিপ্লব দেবের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ত্রিপুরাকে আপনারা ৫০ বছর পিছিয়ে দিচ্ছেন। ত্রিপুরার প্রশাসন, ত্রিপুরার মা-ভাইবোনদের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করব, কারও পৈত্রিক সম্পত্তি ভেবে রাজ্যটাকে যাচ্ছে তাই করা বন্ধ করুন। সাত দিন আগেই রায় দেওয়া হয়েছে, ত্রিপুরায় যে রাজনৈতিক হিংসা হয়েছে গত কয়েকদিন তা যেন না ঘটে। তার জন্য যেন প্রশাসন সচেষ্ট হয়। কিন্তু হিংসার ঘটনা আরও বাড়ছে। পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে বলে। আমি বিপ্লববাবুকে বলব, আপনি এতটাই নির্লজ্জ হয়ে গিয়েছেন, দেশের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আপনি। যে সময়টায় আপনি হেলমেট বাহিনী, বাইক বাহিনী পাঠিয়ে পাড়ায় পাড়ায় তাণ্ডব করছেন সেই সময়টা যদি উন্নয়নের কাজে দিতেন তাহলে ত্রিপুরার এই অবস্থা হতো না।’