কৃষক আন্দোলনের জেরে শেষমেশ পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে মোদী সরকার। গত শুক্রবারই বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জয় পাওয়ার পরেও কেন্দ্রের ওপর চাপ অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়ে ৬টি দাবি নিয়ে অবিলম্বে কেন্দ্রের সঙ্গে ফের আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিল কৃষক সংগঠনগুলির জোট সংযুক্ত কিসান মোর্চা। চিঠিতে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি গ্যারান্টির পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিল ২০২০-র সংশোধনী প্রস্তাব পাশ, কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের যাবতীয় এফআইআর তুলে নেওয়া ও আন্দোলনকারী যে ৭০০ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে, তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কৃষক আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ না হলেও আপাতত যাবতীয় কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাই করেছে তারা।
রবিবার সিংঘু সীমান্তে একত্রিত হয় সংযুক্ত কিষান মোর্চর অধীনে থাকা ৩২টি কৃষক সংগঠন। সেখানেই আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হয় যে, আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন সংসদ অবধি পদযাত্রা করা হবে। শুক্রবার, গুরু নানক জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন কৃষি আইন প্রত্যাহারের। একইসঙ্গে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, কৃষকরা এ বার যেন নিজেদের ঘরে, নিজেদের ক্ষেতে ফিরে যান। তবে কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত সেদিনই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এখনই আন্দোলনে ইতি টানা হচ্ছে না। সংসদ অধিবেশনে আইন প্রত্যাহারের কাজ সম্পূর্ণ না হওয়া অবধি আন্দোলন জারিই থাকবে। এরপর সংযুক্ত কিসান মোর্চার তরফেও শনি ও রবিবার বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এই বৈঠকেই কৃষক আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা হবে।
সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগে কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিষয়ে মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন মিলতে পারে। আগামী বুধবার মন্ত্রিসভার যে বৈঠক রয়েছে, সেই বৈঠকেই কৃষি আইন প্রত্যাহারের কাজ আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কেন্দ্রের তরফে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তার উপর ভিত্তি করেই কৃষক আন্দোলন জারি রাখা হবে কিনা, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মাঝের এই কয়েকটি দিনে যাবতীয় কর্মসূচী চালু থাকবে বলেই জানানো হয়েছে। যেমন আগামীকাল লখনউয়ে যে মহাপঞ্চায়েত হওয়ার কথা ছিল, তা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ীই হবে। ২৪ নভেম্বর কিসান মজদুর সংঘর্ষ দিবস পালন করা হবে এবং ২৬ নভেম্বর কৃষক আন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে একটি পদযাত্রার আয়োজন করা হবে। একইসঙ্গে ২৯ নভেম্বর ‘সংসদ চলো’ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে।