শীঘ্রই কলকাতা এবং হাওড়ায় বাজতে চলেছে পুরভোটের বাদ্যি। আদালতের নির্দেশ পেলেই এই দুই পুরসভায় নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে ১৯ ডিসেম্বর ভোট ধরেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল। প্রার্থী তালিকাও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। দলের অন্দরের খবর, সাংসদদের এবারের পুরভোটে প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় নীতি মেনে পুরভোটের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন সাংসদ মালা রায় এবং শান্তনু সেন। মালা বর্তমানে দক্ষিণ কলকাতা লোকসভার সাংসদ। আর শান্তনু রাজ্যসভার। ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে এ বার এই দুই সাংসদকে টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলেই সূত্রের খবর। সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি, মালা বর্তমানে ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর, শান্তনু তিন নম্বর ওয়ার্ডের। কিন্তু এবার দু’জনকেই ছাড়তে হতে পারে ওয়ার্ডের দায়িত্ব।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সাল থেকে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মালা। কংগ্রেসের টিকিটে জিতে প্রথমবার কাউন্সিলর হয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল গঠনের পর স্বামী নির্বেদ রায়কে সঙ্গী করে যোগ দেন নতুন দলে। ২০০০ সালে ৮৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জোড়া ফুলের প্রতীকে জয়ী হলে মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অধীনে মালা হয়েছিলেন মেয়র পারিষদ। কিন্তু ২০০৫ সালে মমতার সঙ্গে বিবাদের জেরে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন মালা-নির্বেদ। ২০০৫ এবং ২০১০ সালে কংগ্রেসের প্রতীকেই ৮৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন মালা। এরপর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে বিবাদের জেরে ২০১৫ সালের পুরভোটের আগেই তৃণমূলের প্রত্যাবর্তন হয় মালা-নির্বেদের। সেবার জিতে কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন হন তিনি।
এরপর ২০১৯ সালে মালাকে দক্ষিণ কলকাতায় তৃণমূলের প্রার্থী করেন মমতা। যাতে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। বর্তমানে সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি কো-অর্ডিনেটর এবং পুরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে তিনিই। তাই ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ কার্যকর করে মালাকে শুধু সাংসদ পদে রেখে দেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে, ২০১০ সালে কলকাতা পুরসভার ভোটে দুই নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে প্রথমবার কাউন্সিলর হন শান্তনু। কিন্তু ২০১৫ সালে দুই নম্বর ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তিন নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতে নিজের কাউন্সিলর পদ ধরে রেখেছিলেন তিনি। এরপর ২০১৮ সালে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠান মমতা। বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি তিন নম্বর ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর তিনি। তাঁকেও ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে পুরভোটে প্রার্থী করা হবে না বলে খবর।