একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির স্বপ্ন ছিল গঙ্গাপারের নীলবাড়ির দখল পাবে দল। তার আগে ছোট লালবাড়ি কলকাতা পুরসভা দখলের স্বপ্নও ছিল বিজেপির। কিন্তু বাংলার একের পর এক নির্বাচন ও উপনির্বাচনে ভরাডুবির পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সে স্বপ্ন যে বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয় সেটা বুঝে এখন বিজেপির লক্ষ্য, যে কোনও মূল্যে দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করা। তবে লাগাতার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দলের নয়া রাজ্য সভাপতি বাছাইয়ের পর দু’মাস কেটে গেলেও গঠনই করা যায়নি বিজেপির নতুন রাজ্য কমিটি।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফোনালাপের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু বলতে না চাইলেও শুক্রবার সুকান্ত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার অনেক রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে।’ বিজেপির কেন্দ্রীয় পার্টির শীর্ষ সূত্রে জানা যাচ্ছে, দলের রাজ্য সভাপতির সঙ্গে প্রধানত বাংলায় বিজেপির সাংগঠনিক হালহকিকত নিয়েই কথা হয়েছে শাহর।
প্রসঙ্গত, যেভাবে একুশের নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই রাজ্য বিজেপিতে দলত্যাগের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে, তাতে যারপরনাই চিন্তিত দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য নেতারা ‘ভোট-পাখি’, ‘ধান্দাবাজ’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও দলের নিচুতলার কর্মী-সমর্থকদের ভবি যে তাতে ভুলছে না, সেটি বিলক্ষণ জানেন কেন্দ্রের নেতারা। আর তাই গোটা বিষয়টি যথেষ্টই অস্বস্তিতে রেখেছে তাঁদের। দলীয় সূত্রে খবর, সুকান্তর কাছে শাহ জানতে চেয়েছেন, এহেন ঘটনা আটকানোর আশু সমাধান কী হতে পারে?
উল্লেখ্য, শিয়রেই পুরভোট। এই অবস্থায় দলের কোন্দল বন্ধ করতে না পারলে পুরভোটে যে আরও বিড়ম্বনায় পড়তে হবে, তা একান্তে মেনেও নিচ্ছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। কারণ অতীতেও বাংলায় পুরভোট কিংবা পঞ্চায়েত ভোটে দলের টিকিট বিলি নিয়ে চরম গোষ্ঠী কোন্দল প্রত্যক্ষ করেছে বিজেপি। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা বিজেপির দিল্লির নেতাদের। এই পরিপ্রেক্ষিতেই গোটা সমস্যার একটি সার্বিক সুরাহা চাইছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।