রাজ্যজুড়ে আমজনতার মধ্যে বিপুল সাড়া ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প। বাড়ির কাছেই সরকারি প্রকল্পের সমস্ত কাজ হওয়ায় সাধারণ মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন। এবার মধ্যমগ্রামের সভা থেকে নতুন বছরের জন্য দুয়ারে সরকারের দিনক্ষণ ঠিক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, জানুয়ারিতে দু’দফায় দুয়ারে সরকার করতে হবে। মাঝে মকর সংক্রান্তির উৎসব। তখন কিছুটা সময় ফাঁকা থাকবে। বাকি সময়ে এটা সুচারুভাবেই সম্পন্ন করতে হবে। সরকারের কিছু গুরুত্বহীন প্রকল্পকে জনপ্রিয় প্রকল্পগুলির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কর্মসূচী প্রথম দফায় চলবে ২ থেকে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত। তারপর থেকে ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে তিনি বলেন, “অনেক ছোটখাটো প্রকল্প আছে। আরও অনেক নতুন প্রকল্প করেছি। নতুন স্কিম আসার পর পুরনো অনেক স্কিম মূল্যহীন হয়ে গিয়েছে। তার একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। ছোটখাট স্কিমে সরকারি অর্থ ঢুকছে। ওই টাকা বস্তুত কাজে লাগছে না। যেমন, ধানের গোলা প্রকল্প। আমরা সরাসরি কৃষকবন্ধুতে টাকা দিচ্ছি। কৃষিবিমায় সরাসরি টাকা পাচ্ছেন কৃষকরা। ১২০টি স্কিমের মধ্যে হয়তো ৬০টিতে কাজ হচ্ছে। তাই ছোট স্কিমগুলিকে যুক্ত করতে হবে।”
পাশাপাশি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রসঙ্গে তাঁর সরকারের নীতি স্পষ্ট করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, কোনও ব্যাঙ্ক স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড না করলে, অন্য ব্যাঙ্ক বা সমবায় ব্যাঙ্ককে দায়িত্বটি দিতে হবে। ২০শে নভেম্বর স্টুডেন্ট মেলা। দশ হাজার জনকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে। তাতে ছাত্রছাত্রীরা মোট ১৫০-২০০ কোটি টাকা লোন পাবে। এমন মেলা প্রতি ২০ দিনে একটি করে করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার নির্দেশো দেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এদিনের বৈঠকে বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি খাল সংস্কারের দাবি জানান। অর্থসংকটের বাস্তবটি মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, সমাধান ধীরে ধীরে হবে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে রাস্তা তৈরির জন্য মাটি পড়ে থাকায় জল জমার সমস্যা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে আধিকারিকদের তিনি বলেন, রাস্তার ধারে জমে থাকা মাটি ১০০ দিনের প্রকল্পে কাটা হলে অনেকে কাজ পাবেন। ওই মাটি বিক্রি করে টাকাও পাওয়া যাবে। তাতে খাল সংস্কার করা সম্ভব। এই বিষয়টি সেচ এবং পূর্তদপ্তরের প্রধান সচিবদের দেখার নির্দেশ দেন মমতা।