নদিয়ার সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দা ওঁরা। তাই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ভারী বুটের শব্দ তাঁদের কাছে নতুন নয়। কিন্তু এবার পরিসরে আরও বাড়তে চলেছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর আওতাধীন এলাকা। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বিএসএফ-এর কড়া দমন নীতির ফলে তাঁদের দিন আনা দিন খাওয়া জীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। রাস্তায় চলা ফেরা করতেও বাঁধা দেওয়া হয়। যখন তখন চলে তল্লাশি। এমনকী সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগও করেছেন এলাকার মহিলারা। পাশাপাশি তাঁরা মনে করছেন, এলাকার মহিলারা আরও বেশি ভুগবেন নিরাপত্তাহীনতায়। গোটা বিষয়টিতে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থাকলেও, এমন অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না বিজেপির নেতা-কর্মীরাও।
স্থানীয় বাসিন্দা এক মহিলার দাবি, ‘ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে তার মধ্যে এই বাহিনীর দাপট বাড়লে কী হবে কে জানে! ওরা তো রাস্তা ঘাটে দাঁড় করিয়ে মামলা করে দেয়। বাহিনীর নির্দিষ্ট রাস্তায় উঠলে অনেক সময়ই ব্যাগের মধ্যে কিছু দিয়ে পাচারের মিথ্যে মামলা করে দেয়। মেয়েরাও নিরাপদ নয়।’ এলাকার বাসিন্দা নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের সুবিধা অসুবিধার বিষয় এতদিন রাজ্য প্রশাসন দেখত। বিএসএফ এলাকার মধ্যে এতদিন ১৫ কিলোমিটার ছিল। সেই এলাকাতেও বিএসএফ খুব অত্যাচার করে। এ বার এলাকা আরও বাড়লে আমদের কথা কে শুনবে? বিএসএফ তো আমাদের ভাষাও বোঝে না।’
আর এক বাসিন্দা রাজলক্ষ্মী দত্ত বলেন, ‘বিএসএফ তো আমাদের নিজেদের কাজই করতে দেয় না। পাট আনতে যাচ্ছি, ওদের রাস্তায় উঠলেই আটকাবে। আমরা ওদের রাস্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। কিন্তু এ বার যদি আরও বেশি রাস্তা ওদের আওতায় আসে, তখন কী করব?’ অন্যদিকে, বিএসএফের এলাকা বাড়ানোর বিষয় নিয়ে তৈরি হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। সংশ্লীষ্ট মহল মনে করছে এতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নষ্ট হতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব রাজ্যের। সেখানে বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির অর্থ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সরাসরি কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপান উতোর রয়েছে। কিন্তু সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা বিজেপি কর্মীরাও অস্বীকার করতে পারছেন না, বিষয়টিতে সমস্যায় পড়বেন সাধারণ মানুষ। বিএসএফের হাতে বেশি ক্ষমতা তুলে দিলে, তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হবেন সাধারণ বাসিন্দারা।