শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। শিয়রে কড়া নাড়ছে পুরনির্বাচন। ভোট-আবহের মধ্যেই বুধবার উত্তর ২৪ পরগনায় প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই বৈঠকে পুরসভার কাজ নিয়ে অসন্তোষও প্রকাশ করলেন তিনি। বুধবার মধ্যমগ্রামের নজরুল শতবার্ষিকী সদনের বৈঠকে পুরসভার নাম বলে বলে প্রশাসকদের বকাঝকাও করেন মমতা। সাফ জানিয়ে দিলেন, “যিনি ভাল কাজ করবেন না, আগামী দিনে ভাবতে হবে।” পাশাপাশি নির্দেশ দিলেন প্রতি পুরসভায় এক জন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগের। পর্যবেক্ষকরা পুর এলাকায় ঘুরে ঘুরে কাজের খতিয়ান সংগ্রহ করবেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। নজর রাখবেন কোন কাউন্সিলর কেমন কাজ করছেন। সেই রিপোর্ট যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। “মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে হবে। এমন অনেক অভিযোগ আছে যে মানুষের প্রয়োজনে রাজনৈতিক লোকেদের পাওয়া যায় না। ফোন বন্ধ থাকে বা ফোন ধরেন না। এ রকম চলবে না। রাজনীতির লোকেদের সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানুষের পাশে থাকতে হবে,” মধ্যমগ্রামের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।
পাশাপাশি মমতা বলেন, “আলো, জল ও রাস্তা ঠিক রাখাই অগ্রাধিকার। কাজ ফেলে রাখা যাবে না।” ব্যারাকপুর, টিটাগড়, কামারহাটি, নোয়াপাড়া, উত্তর দমদম-সহ জেলার একাধিক পুরসভার কাজে যে মুখ্যমন্ত্রী খুশি নন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুরসভা এলাকায় অনেক সমস্যা আছে। আপনারা এলাকা ঘুরে দেখছেন না কোথায় কী সমস্যা আছে। কেন এলাকার কাজে গুরুত্ব দিচ্ছেন না?” তার পরই প্রতিটি পুরসভায় এক জন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যবেক্ষকরা কাউন্সিলরদের কাজের উপর নজরদারি করবেন। কোথায় কী সমস্যা জানতে এলাকায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তার পর কাজের খতিয়ান নিয়ে রিপোর্ট দেবেন। পাশাপাশি এলাকার বিধায়ক ও সাংসদদের সঙ্গেও পুর প্রশাসকদের সম্পর্ক ভাল রাখার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “রাজনীতির লোকেদের ফোনে পাওয়া যায় না, এ রকম অভিযোগ পেয়েছি। কেন মানুষ আপনাদের ফোনে পাবে না? এতদিন অনেক নিয়েছেন। এ বার মানুষকে পরিষেবা দিন।”
এপ্রসঙ্গে উঠে আসে বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত চিংড়িহাটা মোড়ে একাধিক দুর্ঘটনার কথা। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, চিংড়িহাটায় কেন রোজ রোজ দুর্ঘটনা ঘটচ্ছে? কেন কলকাতা পুলিশ ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ইগোর লড়াইয়ের শিকার হবেন আমজনতা? তাঁর নির্দেশ, পুলিশকে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিতে হবে। চিংড়িহাটা এলাকায় আর যেন একটিও দুর্ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১লা জানুয়ারি রাজ্যে পালিত হবে ছাত্র দিবস। ১২ই জানুয়ারি মেধাবী পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হবে স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ২ জানুয়ারি থেকে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত দুয়ারে সরকার ক্যাম্প বসবে, তার পর মকর সংক্রান্তির পর ২০ জানুয়ারি থেকে আবার ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্প চলবে। ২০ নভেম্বর ঋণ মেলার মাধ্যমে ১০ জন পড়ুয়ার হাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়া হবে।