বিগত সোমবার রাতে শ্রীনগরে চারজনকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। তাদের বক্তব্য, মৃতরা ছিল জঙ্গী মডিউলের সদস্য। মৃতদেহগুলি কবরও দেয় পুলিশ। পরে তিন মৃতের পরিবার দাবি করে, যাদের গুলি করে মারা হয়েছে, তারা ছিল সাধারণ মানুষ। কবর খুঁড়ে দেহগুলি তুলে তাদের হাতে দেওয়ারও দাবি জানায় মৃতদের পরিবারগুলি। জম্মু-কাশ্মীরের মূলস্রোতের দলগুলিও দলগুলি দাবি করেছে, অবিলম্বে ওই চারটি মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করতে হবে। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে কাশ্মীর পুলিশের ইনবস্পেক্টর জেনারেল বিজয় কুমার বলেন, হায়দারপোরা বাইপাসে আলতাফ আহমেদ দার নামে একজনের বাড়ি আছে। তার ওপরের তলায় তিনটি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন মুদাসির গুল নামে এক ব্যক্তি। গুল দু’টি ঘরে বেআইনি কল সেন্টার চালাতেন। একটি ঘরে তিনি আশ্রয় দিতেন জঙ্গীদের।
পাশাপাশি আইজি-র দাবি, সোমবার বিকালে পুলিশ খবর পায়, হায়দরপোরা বাইপাসের কাছে জঙ্গীরা জড়ো হয়েছে। তাঁর কথায়, “এরপরেই পুলিশ পুরো এলাকা কর্ডন করে ফেলে। শুরু হয় তল্লাশি। আলতাফকে ডেকে পাঠানো হয়। পুলিশ আলতাফ ও গুলকে নিয়ে বাড়ির ওপরের তলায় ওঠে। একটি বন্ধ ঘরের দরজায় ধাক্কা দেয়।” বিজয় কুমার জানান, প্রথমে কেউ দরজা খোলেনি। পরে জঙ্গীরা দরজা খুলে পিস্তল থেকে গুলি চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে থাকে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আলতাফ ও গুল, দু’জনেই মারা যান। দুই জঙ্গীও নিহত হয়। পুলিশের দাবি, আলতাফ ও গুলকে বাঁচানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছিলেন যে, তাঁদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
পরে বিজয় কুমার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, কেউ যদি নিজের বাড়ি বা দোকানে জঙ্গীদের আশ্রয় দেয়, তাহলে তাকে ফল ভোগ করতেই হবে। মৃত চারজনকে হান্দওয়ারায় সমাহিত করা হয়। পুলিশি অভিযানের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সাদা পোশাকের পুলিশ এসে প্রথমে এলাকার সব দোকান বন্ধ করতে বলে। তারপর বাইকে চড়ে হাজির হয় ৩০ জন। বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ স্থানীয় মানুষের ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। সেগুলি রাত সাড়ে ১২ টার আগে ফেরত দেওয়া হয়নি। আইজি বলেন, নিহত এক জঙ্গীর নাম ছিল আলি ওরফে বিলাল ভাই। সে এসেছিল পাকিস্তান থেকে। অপর জঙ্গীর বাড়ি সম্ভবত বানিহাল এলাকায়। আলতাফের ভাই আবদুল মজিদ ভাট বলেন, “আমরা ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করি না। কিন্তু ভাইয়ের দেহ আমাদের দেওয়া হোক।”