প্রতিবছর বর্ষার মরসুম এলেই জমা জলের কারণে নাজেহাল হতে হয় বেহালা, ঠাকুরপুকুর, মহেশতলা সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে। সেখানকার খাল ঠিকমতো সংস্কার না হওয়ায়, জমা জল বের করা যায় না। আগামী বছর যাতে এই সমস্যা না হয়, তার জন্য ওই অঞ্চলের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খাল সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সেচদপ্তর। সেগুলি হল মণি, আদি মণি এবং পর্ণশ্রী খাল। এই কাজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ কোটির বেশি টাকা। শীঘ্রই এই কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই খালগুলির বহন ক্ষমতা আগের থেকে অনেকটাই কমেছে। পলি, আবর্জনায় মজে গিয়েছে খালের একটা বড় অংশ। ফলে প্রতি বর্ষায় সহজে জল নামতে চায় না মহেশতলা ও সংলগ্ন এলাকায়। খাল সংস্কার নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে দরবার করা হয়। কোথায় সমস্যা হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতি কী, সবটাই তুলে ধরা হয়। দীর্ঘ আলোচনা, পরিদর্শনের পর অবশেষে এই তিনটি খাল সংস্কারের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, আদি মণি ও পর্ণশ্রী খালের জন্য ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৭৯ হাজার ৩০৪ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। বিভিন্ন বাড়ির আবর্জনা এই খালে ফেলা হয় দিনের পর দিন। এছাড়াও নর্দমার যাবতীয় নোংরা, প্লাস্টিক ইত্যাদি এসে পড়ে এই খালের জলে। যার ফলে বহন ক্ষমতা কমেছে এবং মজে গিয়েছে। এবার পলি তুলে আগের রূপে ফেরাতে হবে এই দু’টি খালকে। এক আধিকারিক জানান যে এর ফলে কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর বরোর অধীনে যে সব অঞ্চল পড়ে, যেমন বেহালা, পর্ণশ্রী এবং মহেশতলা পুরসভার একটা অংশে জল জমার সমস্যা মিটবে। পাশাপাশি, মণি খালের হাল বেশ খারাপ। সাড়ে ৬ কিলোমিটার লম্বা এই খাল রবীন্দ্রনগর, পর্ণশ্রী, মহেশতলার বিভিন্ন এলাকা দিয়ে গিয়েছে। সেটি পরিদর্শনের পর সেচদপ্তরের আধিকারিকরা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, আশপাশের কারখানার বর্জ্য এই খালে এসে পড়ছে। বাড়ির আবর্জনাও ড্রেনের মাধ্যমে এখানে এসে মিশছে। ফলে পলি জমে একপ্রকার মজেই গিয়েছে এই খাল। আরও একটা সমস্যা হল, এই খালের একটা অংশ ঢালু। তাই জল বেরোতে অসুবিধা হয়। তাই পলি তোলার সময় এই দিকটিও মাথায় রাখতে হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পর্ণশ্রীর একটা বড় অংশ এবং মহেশতলা পুরসভার বিস্তীর্ণ অঞ্চল উপকৃত হবে। এই খাল সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৮ কোটি ২২ লক্ষ ৮১ হাজার ৮৪৫ টাকা।