মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এবার রোগীদের জন্য শুরু হচ্ছে ল্যাপোরেস্কোপি সার্জারির বন্দোবস্ত। জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে সামনের সপ্তাহ থেকেই এই পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে। ফলে, নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে সাধারণ মানুষেকে আর বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে ছুটতে হবে না। সমস্ত পরিষেবাটাই মিলবে নিখরচায়। সেই মতো সমস্ত পরিকাঠামো একপ্রকার তৈরি। জেলা কর্তারা হাসপাতালের পরিকাঠামো পরিদর্শন করে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এপ্রসঙ্গে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার সায়ন দাস বলেন, প্রায় সমস্ত কিছু একপ্রকার প্রস্তুত। দু’-একটা ছোটখাট যন্ত্রপাতির খামতি রয়েছে। তবে সেগুলিও এসপ্তাহের মধ্যে চলে আসবে। জানা গিয়েছে, পিত্তথলিতে পাথরের সমস্যা নিয়ে অনেকেই ভোগেন। অপারেশন করে বের না করা পর্যন্ত রোগীর নিস্তার নেই। আগে ওপেন সার্জারি করে এর চিকিৎসা করা হতো।চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ইদানীং ওপেন সার্জারির পরিবর্তে ল্যাপোরেস্কোপি বা মাইক্রো সার্জারির মাধ্যমে এর চিকিৎসা করা হয়। তাতে রোগীকে অনেক কম ধকল সহ্য করতে হয়।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই অপারেশনের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা পরই রোগী হাঁটাচলা করতে সক্ষম হয়। কিন্তু, মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলোতে সে পরিষেবা মেলে না। বাধ্য হয়ে রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালের দ্বারস্থ হতে হয়। কিন্তু, নার্সিং হোম বা বেসরকারি হাসপাতালগুলো পরিষেবা বাবদ মোটা টাকা ধার্য করে। নূনতম ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে।
উল্লেখ্য, রঘুনাথগঞ্জে গড়ে ওঠা একাধিক নার্সিং হোমে গড়ে মাসে শতাধিক ল্যাপোরেস্কোপি হয়ে থাকে বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকেও এত টাকা পাওয়া যায় না। ফলে, নার্সিং হোমগুলি বাড়তি টাকা দাবি করে। রোগী বাড়তি অর্থ না দিলে তখন নার্সিং হোমগুলি রোগী ফিরিয়ে দেয়। এদিকে, এত টাকা খরচ করা সাধারণ মানুষের পক্ষে কার্যত অসাধ্য হয়ে পড়ে। মহকুমা হাসপাতালে এই পরিষেবা শুরু হলে সাধারণ মানুষের পক্ষে তা সুবিধাজনক হবে বলে আশাবাদী এলাকাবাসী। হাসপাতালের সুপার সায়ন দাস আরও বলেন, “ল্যাপোরেস্কোপি গড়ে দিনে বা মাসে ক’টি করা যাবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আমাদের লক্ষ্য পরিষেবাটা আগে চালু করা। তখন, রোগীর চাপ আর পরিস্থিতি অনুযায়ী বাকি সব ঠিক করা হবে।”