তিহার জেলের ভিতর অপরাধীদের আখড়া। এই অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকার সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের অন্যতম প্রথমসারির (নিরাপত্তার নিরিখে) তিহার জেল। সেই জেলেই অবাধে খুনোখুনি চলছে। সংবাদ মাধ্যমের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন উল্লেখ করে এই উষ্মা প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। জেলের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা দুঃখজনক। এভাবেই সরব হয়েছেন বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং শাহের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি জেলের আমূল সংস্কার এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরালো করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দিল্লীর সিপি রাকেশ আস্থানার জেল পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর প্রস্তাবও কেন ফেলে রেখেছে মন্ত্রক? এই প্রশ্ন তুলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি ইডি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, জেলে বসেই সমান্তরাল রিয়াল এস্টেট ব্যবসা চালাচ্ছেন ইউনিটেকের দুই কর্ণধার সঞ্জয় এবং অজয় চন্দ্র। বাড়ি গ্রাহকদের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে ২০১৭ থেকে জেলবন্দী এই দুই রিয়াল এস্টেট ব্যবসায়ী।
যদিও ইতিমধ্যে দিল্লী পুলিশ এই দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অর্থ তছরূপ এবং আইপিসির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। মামলা চলছে ৩২ জন জেলকর্মীর বিরুদ্ধেও। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তিহার জেল সংস্কারে একাধিক সুপারিশ পাঠিয়েছিল।
সিসিটিভির সংখ্যা বাড়ানো, মোবাইল জ্যামার, বডি স্ক্যানার বসাতে মন্ত্রককে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল। ৬ অক্টোবরের মধ্যে সেই সুপারিশ কার্যকর সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ খাতায়-কলমে পড়ে। কোনও পদক্ষেপ করেনি অমিত শাহের মন্ত্রক। এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে।
তাই এদিন শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ‘তিহার জেলের অভ্যন্তরীণ অবস্থা দুঃখজনক। আমরা কাগজে দুই-তিন দিন আগে পড়েছি জেলের ভিতর খুনোখুনি হয়েছে। জেল এখন অপরাধীদের আখড়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিবকে নির্দেশ অবিলম্বে এই অবস্থা বদলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে। পাশাপাশি দিল্লীর সিপি রাকেশ আস্থানার সুপারিশ কতটা কার্যকর হয়েছে? আগামি তিন সপ্তাহের মধ্যে সেই স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিক মন্ত্রক।‘ অবিলম্বে দ্রুত পদক্ষেপ নিক মন্ত্রক। এখনও পর্যন্ত অবস্থা বদলে কোনও ইতিবাচক ভূমিকা পাওয়া যায়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। এভাবেও সুর চড়িয়েছে শীর্ষ আদালত।