তিনি পরিশ্রমী। তিনি কর্মঠ। তিনি উদ্যমী। তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। একাধারে তিনি রাজ্যের ৮টি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রীও। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই নিজের হাতে কাজ করতে পছন্দ করেন। মাঠে নেমে আন্দোলন যেমন করতে পারেন, তেমনই পারেন দিনরাত পরিশ্রম করে মানুষের কাজ করতে।
মুখ্যমন্ত্রিত্বের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে সামলাচ্ছেন রাজ্যের মহাগুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্র দপ্তর। নিয়মিত এই দপ্তরের কাজ তিনি সামলান একাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মতোই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরও নিজের হাতে রেখেছেন মমতা। এই দফতরে প্রতিমন্ত্রী হিসাবে রয়েছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বরাবরের সংস্কৃতিপ্রেমী মমতা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরও রেখেছেন নিজের হাতেই। এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের পাশাপাশি আরও কয়েকটি ছোটখাট দফতরবরাবরই ছিল মমতার হাতে। কিন্তু এবার সেই তালিকায় আরও দুটি বড় দফতরযুক্ত হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বরাবরই ভীষণ প্রিয় জায়গা। এবারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব নিজের কাঁধে রেখেছেন মমতা। ২০১১ থেকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের দায়িত্বে ছিলেন গৌতম দেব। ২০১৬’র পর সেই দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী দেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। কিন্তু ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে এই দু’জনই পরাজিত হন। তাই আর উত্তরবঙ্গের কাউকে এই দায়িত্ব না দিয়ে নিজেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সামলানোর সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। আসলে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের পাহাড় তিনি নিজের হাতে সাজাতে চাইছিলেন। এই দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয় মালদহের সাবিনা ইয়াসমিনকে।
এবার অমিত মিত্র অব্যাহতি নেওয়ায় অর্থদফতরের দায়িত্বও এসে পড়ে মমতার হাতেই। আসলে, এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক দিক থেকে একাধিক বিষয়ে কড়া চ্যালেঞ্জের সামনে রাজ্য। গোটা দেশে যখন আর্থিকক্ষেত্রে চরম দুরবস্থা চলছে, তখন বাংলাকে সেই মন্দার আঁচ থেকে বাঁচিয়ে রাখা। আগের প্রকল্পগুলির পাশাপাশি ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র মতো নতুন প্রকল্পও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার খরচও সামলানোর ভার রাজ্যের কোষাগারের উপরই। সেইসঙ্গে সামলাতে হবে কোভিডের ধাক্কা। অমিত মিত্র থাকলে হয়তো এই কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলাতে খুব একটা অসুবিধা হত না। তাঁর অনুপস্থিতিতে এ হেন কঠিন পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রক আনকোরা কারও হাতে তুলে দিতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী।