এবার দূরদর্শনের রিলে সেন্টার বন্ধ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাভাবিকভাবেই তাদের এই আচমকা তুঘলকি সিদ্ধান্তে চরম ক্ষুব্ধ দক্ষিণ দিনাজপুরের সংস্কৃতিপ্রেমীরা। বিভিন্ন সংস্থাকে বেসরকারিকরণের মতোই চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার দূরদর্শনের বালুরঘাট রিলে সেন্টারটি বন্ধের নির্দেশ জারি করে। সেই নির্দেশ মেনেই চলতি বছরের শেষেই কলকাতা, বহরমপুর, কৃষ্ণনগর ও বালুরঘাটের দূরদর্শনের রিলে সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী ৩১শে ডিসেম্বর সেই নির্দেশ কার্যকর হতে চলেছে।
বিগত ১৯৮০ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎকালীন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অজিত পাঁজা বালুরঘাটে দূরদর্শনের রিলে সেন্টারের উদ্বোধন করেন। কেন্দ্রীয় সরকারও সেই সময় পড়শি ভিন দেশের সংস্কৃতির প্রতি আসক্ত হওয়ার থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত-লাগোয়া মানুষদের বিরত রাখতে এবং দেশীয় সংস্কৃতির প্রতি আকর্ষণ অক্ষুণ্ণ রাখতে দূরদর্শনের মাধ্যমে একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা শুরু করে। যে কারণে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা প্রান্তিক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মানুষদের কাছে দূরদর্শন হয়ে উঠেছিল সাংস্কৃতিক বিনোদনের মাধ্যম। কিন্তু বালুরঘাটে দূরদর্শনের রিলে সেন্টার বন্ধের নির্দেশের খবর চাউর হতেই ক্ষোভ ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে।
এপ্রসঙ্গে বালুরঘাটের বাসিন্দা তথা জেলার অন্যতম খ্যাতনামা সঞ্চালক সঞ্জয় কর্মকার বলেন, “আমরা বালুরঘাটের দূরদর্শনের রিলে সেন্টার বন্ধের তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, দেশের প্রান্তিক জেলা হিসাবে আমরা এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত, তার উপরে আমাদের সংস্কৃতি প্রচারের অন্যতম মাধ্যম বালুরঘাটের দূরদর্শনের রিলে সেন্টারটি যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেটা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে একটি বাজে সিদ্ধান্ত।” একাংশের বক্তব্য, বালুরঘাটের দুরদর্শনের রিলে সেন্টারটা বন্ধ না করে ফোর জি, ফাইভ জি টেকনোলজির মাধ্যমে সরাসরি মোবাইল সার্ভিস করে রিলে স্টেশনগুলিকে পুনরুদ্ধার করা যেত। তাহলে স্টেশন থাকত, কর্মীরাও কাজ করতে পারত এবং আয়ও হত। দূরদর্শনের বালুরঘাট স্টেশনের আধিকারিক অমিতাভ কর্মকার বলেন, “হাইপার ট্রান্সফরমিটার ৯০ কিলোমিটার রেঞ্জগুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত। আমাদের কিছু করার নেই।”