সালটা ২০১৬। তারিখ, ৮ই নভেম্বর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করলেন, রাত ১২টা থেকে দেশে ৫০০ ও হাজার টাকার নোট আর চলবে না। তার পর দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে প্রায় পাঁচ বছর। আরও একটি ৮ই নভেম্বর আসতে আর বাকি তিন দিন। নোটবন্দির ঘোষিত উদ্দেশ্যগুলোর অন্যতম ছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে নগদের ঢালাও ব্যবহার বন্ধ করে, তাঁদের ডিজিটাল লেনদেনের পথে নিয়ে আসা। পাঁচ বছর পর কী অবস্থা? নগদে লেনদেনে আদৌ রাশ পরানো গিয়েছে কি? উঠছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী মানুষের কাছে এখনও লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ সেই নগদ টাকাই। এ বছর ৮ই অক্টোবর শেষ হওয়া পক্ষকালে মানুষের হাতে নগদের পরিমাণ ছিল ২৮.৩০ লক্ষ কোটি। যা নোটবন্দির ঠিক আগে, ৪ নভেম্বর, ২০১৬-এর তুলনায় ৫৭.৪৮ শতাংশ বা ১০.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা বেশি। ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর, মানুষের হাতে ছিল ১৭.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা। আর ২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর মানুষের হাতে নগদের পরিমাণ ছিল ৯.১১ লক্ষ কোটি টাকা। যার তুলনায় বর্তমান রাশি ২১১ শতাংশ বেশি। হিসাব বলছে, এ যাবৎ দেশের মানুষের হাতে যত পরিমাণ নগদ মজুত রয়েছে, তা সর্বকালীন রেকর্ড।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, ২০১৬-এর নভেম্বরে রাতারাতি ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট তামাদি ঘোষিত হওয়ার ঠিক আগে মানুষের হাতে নগদের পরিমাণ ছিল ১৭.৯৭ লক্ষ কোটি টাকা। নোটবন্দির ঠিক পরে, ২০১৭-এর জানুয়ারি মাসে তা কমে গিয়ে ঠেকে ৭.৮ লক্ষ কোটি টাকায়।উৎসবের মরসুমে সাধারণত নগদ লেনদেন বেশি হয়। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু শুধু উৎসবই নয়, এ দেশের ১৫ কোটি মানুষের এখনও ব্যাঙ্কের খাতা নেই। স্বভাবতই তাঁরা নগদ লেনদেনই করে থাকেন। তা ছাড়া, দেশের ‘টিয়ার-ফোর’ শহরে সাধারণ লেনদেন তো বটেই, ই-কমার্স সংস্থায় কেনাকাটাও ৯০ শতাংশই হয় নগদে। যা কলকাতার মতো ‘টিয়ার-ওয়ান’ শহরে ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হিসেবেই স্পষ্ট, নোটবন্দির সিদ্ধান্তের পর পাঁচ বছর কেটে গেলেও অন্যতম ঘোষিত উদ্দেশ্য এখনও ধোঁয়াশায়।