অবশেষে প্রশান্ত কিশোরেই আস্থা রাখছে কংগ্রেস। পাঞ্জাবে কঠিন লড়াইয়ে পিকে-র কৌশলেই বাংলার ন্যায় বাজিমাত করতে চায় কংগ্রেস। বিশেষত, মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি ভোট কৌশলী হিসেবে পাশে চান প্রশান্তকেই।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সামনে জাতীয় রাজনীতির ভবিষৎ নিয়ে কথা প্রসঙ্গে গিয়ে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের মুখে শোনা যায়, ‘আগামী কয়েক দশক জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে থাকবে বিজেপি। ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াই করতেই হবে। ঠিক যেভাবে প্রথম ৪০ বছর ছিল কংগ্রেস।’
প্রশান্ত কিশোরের মুখে এই কথা শোনার পরই জাতীয় রাজনীতিতে শুরু হয়ে যায় শোরগোল। পিকে-র মন্তব্যের জেরে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস সমালোচনায় মুখ হয়ে ওঠে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর মতো অনেক কংগ্রেস শীর্ষ ব্যক্তিত্বই তলে তলে পিকে-র সঙ্গে বিজেপির আঁতাতের অভিযোগ তোলেন। এতদসত্ত্বেও পাঞ্জাব বিধানসভার লড়াইয়ে প্রশান্ত কিশোরকেই চায় চান্নির প্রদেশ কংগ্রেস।
মুখ্যমন্ত্রী চান্নি রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি সিধু-সহ রাজ্যের মন্ত্রী ও বিধায়কদের নিয়ে যে বৈঠক করেন, সেই বৈঠকেই উঠে আসে পিকের প্রতি পাঞ্জাব কংগ্রেসের নির্ভরতা। প্রকাশ্যে আসা বৈঠকের এক ভিডিয়োতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী চান্নি বলছেন, ভোটের সমস্ত কৌশল তৈরির দায়িত্ব প্রশান্ত কিশোরকেই দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হরিশ চৌধুরী। অতীতে অমরিন্দর সিংয়ের জন্য তৈরি প্রশান্ত কিশোরের ‘কফি উইথ ক্যাপ্টেন’-এর মতো প্রোমোশনাল স্ট্র্যাটেজির সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন চান্নি।
প্রসঙ্গত, এই নির্বাচন চান্নির জন্য একরকমের প্রেস্টিজ ফাইট। ক্যাপ্টেনকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে মনোনীত হওয়ার পর জনতার রায়ে নির্বাচিত হওয়াটা সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ তাঁর কাছে। অপরদিকে, অন্যতম কড়া প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজের নতুন দল পাঞ্জাব লোক কংগ্রেস-এর টিকিটে বিধানসভায় লড়বেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং।
উল্লেখ্য, গোয়ার ওই সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের কাজেরও প্রবল সমালোচনা করেন আইপ্যাক কর্ণধার। কংগ্রেসের দূরদর্শিতা নিয়ে পরোক্ষভাবে প্রশ্ন তুলে পিকে বলেন, ‘কোনও স্থানীয় কংগ্রেস নেতার সঙ্গে কথা বলুন তাঁরা মনে করেন নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা থেকে সরানো শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।’ সমালোচনা করেন রাহুলেরও।
বলেন, ‘রাহুল গান্ধী ভাবেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বিজেপিকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। কিন্তু, তা হবে না। যতদিন না পর্যন্ত মোদীর শক্তির বিষয়ে ধারনা করতে পারছেন, ততদিন তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।’ তাঁর এই মন্তব্যে ভিতরে-বাইরে এত ক্ষোভ প্রকাশের পর হাতশিবির যদি তাঁকেই কৌশলী হিসেবে নিযুক্ত করে তা অবশ্যই উল্লেখ্য ঘটনা হবে।